তিল তিল ঘাম হওয়া খুনে খুনে পুঞ্জিত কয়লার প্রাচুর্য
তবু গায়ে কাঁটা দেয়া হিমঋতুর শীতলতায় কয়লার অনটন
ঘরে ঘরে উত্তাপহীন ফায়ারপ্লেস
শীত-কাতুরে উপায়হীন আমেরিকান শিশুর মুখে
উত্তেজিত দ্রোহী শব্দের ভিড়
“আমরা শীতে মরি, আগুন জ্বালিয়ে দাও কয়লার স্তুপে”
বঙ্গোপসাগরের তটে শব্দগুলো বাতাসে ভেসে আসে
আমি এক বিপ্লবী, দেহে তারুণ্যের টগবগে খুন
অন্তরে বসত গাড়ে রোমান্টিক বিপ্লবী স্বপ্ন
অথচ আঙিনার এতিম শিশুকে জাপটে ধরেছে ভয়ঙ্কর ভাইরাস
দেহ তার পীতাভ বর্ণে ঢাকা, মনে হয় মনোহর খুবসুরত
ডাক্তারি বিদ্যা ভুলেও আশপাশ ঘেঁষে না
ওষুধের ডিপোগুলো অবারিত নয়, যেন ভারী অভিজাত ঘর
শিশুরা হেরে গিয়ে হারিয়ে যায় অদৃশ্যে
রোমান্টিক বিপ্লবী মনে দাগ পড়ে না …


উন্মাদনা শিরায় শিরায় - রোমান্টিক বারুদ
ঢেলে দেয় মহামতি বিপ্লবী ‘চে’
কিউবান বিপ্লবের ফ্যান্টাসিতে কণ্ঠে ওঠে লঙ্কা বধে হনুমানের গদার কাঁপন
অথচ ইতস্তত রক্তে লাল বঙ্গোপসাগর
ফেনিল ঢেউয়ে ঢেউয়ে উগ্রতার ফেনা, দুর্গত-নিমজ্জিত শরণার্থীর কঙ্কাল
তলদেশ হতে, নীরবতার মাঠ হতে অন্তহীন মৃত্যুর সুধা করে পান
তবু রোমান্টিক বিপ্লবী মনে আঁচড় পড়ে না …


পাশের বাড়ির দাদার রক্তলাল চোখ
তারুণ্যের টগবগে খুনে হিমশীতল বরফ জমে
“দাদা অনেক বড়, করতেই পারে একটু-আধটু অন্যায্য আবদার
চুপ থেকে ধৈর্য ধরলেই হয়”
যেন নেড়ি কুকুরের লেজ গুটানো কু … কু … স্বর
হায়রে ! সজীব তারুণ্যের স্বাধীনচেতা বিপ্লবী মানস …


কর্ণে ভাসে মানবতার উজ্জ্বল কথামালা, সুলোলিত সুর
মানবতা - মানবতা, পতপত ধ্বজা ওড়ে আকাশে
ক্ষমতার আঁচ পেলে ভুলে যায়, দিশাহীন ছোড়াছুড়ি
সাপের মতো পিটিয়ে বধ করে মানুষ, হেরে যায় মানবতা
হিংস্রতার উল্লাসে মেতে ওঠে
অথচ সব শ্রেণীর মানুষেরই রক্ত লাল হয়
ছিন্নমূল, ফুটপাথের পথকলিরা বাণিজ্যিক পণ্য হয়
বিপ্লবের বাণী বিবর্তিত বাণিজ্যিক চেতনে
আপেক্ষিকতার ক্ষেত্র প্রসারিত হয় বাস্তব বিবর্জিত ফ্যান্টাসিতে
মানবতা হয়ে ওঠে শর্ত-সাপেক্ষ …


তবুও বলবো, আমি এক মহাবিপ্লবী
কণ্ঠে বাগাড়ম্বর-উত্তুঙ্গ ধ্বনি, স্বপ্ন দেখি নতুন প্রভাত হেসে উঠবে … !


ফিরোজ, দিলকুশা, ১০/১০/২০১৯