একটা সময় ছিল, যখন একজন বাঙালি মুসলমান আরেকজন
মুসলমানকে দেখলে সালাম বা আদাব দিয়ে সম্ভাষণ জানাত,
তখন বিদায়ে উচ্চারিত হতো `খোদা হাফেজ..।‘


পাকিস্তান আমলে তো বটেই, স্বাধীনতার পরও এসব রীতি, ঐতিহ্য
আদবকেতার প্রচলন ছিল ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের এই বাংলায়।

বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো এলো পঁচাত্তর! রাতারাতি হয়ে গেলো পটপরিবর্তন!
দেশে ঘটল পোশাকী রাজনীতির নতুন ধারার অনুপ্রবেশ। ক্রমে সমাজের
সর্বত্র শুরু হলো ভিন্ন কায়দায় নব্য ইসলামিয়ানার দুর্বার ঝোঁক।


দেশব্যাপী প্রবল বেগে বইতে শুরু করল অদ্ভুত বদল-হাওয়া। সেই হাওয়ায়
বেমালুম গা ভাসিয়ে দিল বিভ্রান্ত জাতি! এরই সুযোগ নিল ঘাপটি মেরে  
থাকা বর্ণচোরা স্বার্থান্বেষী মহল, গোষ্ঠী ও তাদের সহযোগীরা।


এরা স্বার্থ হাসিলে সমাজ-সংস্কৃতিসহ প্রায় সব কিছুতে কৌশলে ব্যবহার করতে
থাকল ধর্ম। যেন ধর্ম ছাড়া গৌরবের আর কিছুই ছিল না হতভাগা এ জাতির!
এভাবে অলক্ষ্যে নীরবে চলতে থাকল জাতীয় সংস্কৃতির কাটাই-ছাঁটাই..।


এই সুযোগে সমাজে আমদানি হলো ‘আল্লাহ্ হাফেজ’। আউট হলো ‘আদাব,
খোদা হাফেজ’। ঢুকে পড়ল শশ্রু-হিজাব, এক পর্যায়ে ধর্মই হয়ে উঠল
চাটুকার ও রাজনৈতিক অপশক্তির প্রধান বর্ম, যা আজও বহমান..!


তাই আজকাল কেউ আর সাক্ষাতে স্বত:স্ফুর্তভাবে বলে না-
ভাই আদাব, বিদায়েও বলে না.. খোদা হাফেজ ! #


ঢাকা #
২১ মে ২০২১
০৭ জৈষ্ঠ্য ১৪২৮
শব্দ- ১৮৯