কুয়োর শীতল জল আঁজলায় নিয়ে সন্ধেবেলা
চেয়ে থাকি কিছুক্ষণ; জলে কার মুখ ভেসে ওঠে।
পাখির চিৎকার শুনি, ভাঙে শীতল জলের খেলা
অকস্মাৎ, অদূরে কোথাও শরমিলা ফুল ফোটে।



তোমার সঙ্গে আমার দেখা হয়নি কোনো কুয়োতলায়
কিংবা কোনো বাঁশের ঝাড়ে।
তোমাকে আমি দেখেছিলাম এই শহরে কিছু দূরে
স্বল্প ভিড়ে হ্রদের ধারে।
বসেছিলাম পাশাপাশি, হাওয়ায় ছিলো মাদকতা,
ছিলো কিছু জলজ ঘ্রাণ;
চোখের চাওয়ায়, কথা বলার ঈষৎ মায়ায়
দুলেছিলো দু’টি প্রাণ।



তোমার দাঁড়ানো বারান্দায়,
পশামি চপ্পল পায়ে হেঁটে বেড়ানো চাঁদের নিচে, একা
ব’সে থাকা ঘাসে,
অথবা তাকানো সন্ধেবেলা আকাশের
উড়ে-যাওয়া পাখিদের দিকে,
জঙ্গলে সফল পিকনিক, কানায় কানায় ভরা
অবকাশে খাটে শুয়ে নিভৃতে তোমার
নিমগ্ন কবিতা পাঠ, দূরন্ত হাওয়ায়
ফিরোজা শাড়ির আঁচলের নৌকার উদ্দাম পাল
হয়ে যাওয়া-এইসব দেখে যদি
কেটে যেত সারাটি জীবন।



কী ক’রে এখন শান্ত থাকবো বলো
যখন তোমার চোখ দু’টি ছলো ছলো?
আমার হৃদয় ঝড়ের রাতের পথ,
নিঃশ্বাস নেয় রুগ্ন পক্ষীবৎ।
বিষাদ তোমার রূপের পড়শি ব’লে
মনে হয় যেন পড়েছি অগাধ জলে।


   (তুমিই নিঃশ্বাস তুমিই হৃৎস্পন্দন কাব্যগ্রন্থ)