প্লাটিনাম চোখ নিয়ে অজস্র শেয়াল রাত্রিভর
আমার বিছানা নোংরা করে স্বপ্নগুলো
দেয়ালে দেয়ালে ঝোলে সার্টিনের পর্দার মতন।
খুব হিংস্রতায়
একটি বিরাট কাঁচি সেসব পর্দার বুকে স্বেচ্ছাচারী হয়।
আফ্রিকার তিনটি মুখোশ অতি দ্রুত
কোরানের আয়াত আবৃত্তি
করতে করতে
আওড়ায় আদালতী বেবাক শপথ।


আমি কি উম্মাদ হয়ে যাচ্ছি?


ঘরে রাশি রাশি টেলিগ্রাম
অচল নোটের মতো নির্লজ্জ ছড়ানো ইতস্তত
এবং সকল বার্তা উদ্ধার-রহিত। বিছানায় শুয়ে শুয়ে
দেখি মস্ত ছায়ার ধারালো জিভ চাটছে আমাকে
বিশদ ক্ষুধায়।
মেডুসার মুন্ডু চতুর্ধারে নেচে ওঠে বারংবার।
যোগাযোগহীন
টেলিফোন নিয়ে মেতে আছি, কেবলি ডায়াল করি
অসম্ভব ডিজিটের ঘোরে, নিঃশব্দতার ওপর করছি
অলৌকিক বলাৎকার
তবে কি বলবো, হায়, উন্মত্ততা বয়স্য আমার?


এইতো মেঘের বুক ফুঁড়ে


হৃদয়দ্রাবক
তন্বী এক চারা অস্তিত্বের গরিমায় ঝলমলে,
অথচ হঠাৎ
একটি প্রকট হাত, সুবিশাল, দরজা-জানালা ছাদভেদী,
নেমে আসে আমূল উপড়ে নিতে, আমি সাত তাড়াতাড়ি
চারাটাকে মানবিক আড়ালে রাখতে চাই। সেই হাত আমাকে হেলায়
বারবার দিচ্ছে ছুঁড়ে, টেবিলের খাটের তলায়
গিয়েও নিস্তার নেই। সমগ্র সুন্দরবন আসে ঘর ব্যেপে,
চাক চাক আকাশও এখন
আমার নিবাসে, ভাসমান, ডাঁই ডাঁই সংবাদপত্রের নিচে
কেবলি তলিয়ে যাচ্ছি, একজন কাগজের মূর্তি, পিকাসোর
ছবির মতন কয়েকটি
মুখাবয়বের দীপ্র ব্যাপক চমক হেনে ডাকে,
টেবিলের দিকে ফুরফুরে আঙুল নিবন্ধ তার।


ঘরময় ট্রেন দুর্ঘটনা, লঞ্চ ডুবি, জুয়োর টেবিল; অকস্মাৎ
আমার ডবল এসে আমাকেই পরায় লোহার হাতকড়ি,
চতুষ্পার্শে সুর্যমুখী, নতুন বাছুর, গয়লানী সাঁতরাচ্ছে,
শুধু সাঁতরাচ্ছে……
আমি কি উন্মাদ হয়ে যাচ্ছি?


   (আদিগন্ত নগ্ন পদধ্বনি কাব্যগ্রন্থ)