সহজিয়া কে তুমি? তুমি যেনো সেই যক্ষপুরীর নন্দিনী!
আর আমি যেনো কিশোর! তুমি যাকে কথা দিয়েছিলে
রোজ সকালে তার হাত থেকেই ফুল নেবে
তাই তো এখনো প্রতি সকালে প্রতিক্ষায় থাকি
জঞ্জালের পেছন থেকে আনা রক্তকরবী হাতে নিয়ে,
তুমি শুধু প্রতিজ্ঞাই করে গেলে, অপেক্ষা দিয়ে গেলে
ফুল নিলে না। তুমি নাড়া দিয়ে গেলে, সাড়া দিয়ে গেলে না।
তোমার সিঁথিতে ক্ষণিকের জন্য যে রক্তকরবীর মঞ্জরী
পরানোর অধিকার দিয়েছিলে, সেই ক্ষণকালের দান
যে হৃদয়ে আমার আজও অক্ষয়। আর তাইতো
কারও সিঁথিতে সিঁদুর পরানোর কথা ভাবতেও পারি না।
আমি তো নিজেকে নিজের আড়ালেই রেখেছিলাম
যক্ষপুরীর রাজার মতো। তুমি যেদিন প্রথম মালা নিয়ে
আমার ঘরের বাইরে থেকে ডাকলে আমায়, মনে পড়ে
আমি বলেছিলাম আমি পর্বতের চূড়ার মতো,
শূন্যতাই আমার শোভা। তবুও তুমি আমায় জোর করে
বাইরে ডাকলে, মালা পরালে, মাঠের মধ্যে এনে দাঁড় করালে।
তুমি রুপের জালের ভেতরে অপরুপ ছিলে, যে জালে আমাকে
বন্দি করলে। হালকা সে বাঁধন যেনো রক্তকরবীর পাঁপড়ি।
কোমল ব’লেই সে কঠিন বাঁধন আমি ছিঁড়তে পারিনি।
তুমি তোমার মতো করেই এসে চলে গেলে, যেমন করে
বসন্ত আসে যায়। আর আমি আজও আটকা পড়ে আছি
তোমার প্রেমে, শূন্যতায়।



(গুরুজির "রক্তকরবী" পড়ে এ কবিতা লিখতে অনুপ্রাণিত হই।)