সর্বশেষ যাকে নিয়ে অভিমানে গিয়ে মধুমতী
নদীর ভাঙ্গনে পড়লাম
সেই সমবয়সীও কয়েক বছর হয় গত হয়েছে।


আমাদের কষ্ট আর দুঃখে ঘেরা মা বাবা ঈদে নতুন পোষাক আর জিলিপি বাদাম ভাজা কেনার টাকা দিতে পারতো না।
আমরা তাই ঈদের নামাজ না পড়ে অভিমানে যেতাম।
আমাদের দৌড় ছিল না বেশী দূর।
ওই যে মাঠের পরের দূরের দেশটা যেখানে আসমান মাটিতে ছুঁই ছুঁই, সেখানটায়, হ্যাঁ  সেখানটায়
যাবার জন্য বের হয়ে মাইল পাঁচ ছয় ঘুরে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলে পরে অভিমান ভুলে বাড়ি ফিরে আসতাম।


কখনো কারো আখ ক্ষেতের আখ, মিষ্টির আলুর ক্ষেত, চিনাবাদাম, বাঙগী কিংবা তরমুজ সাবাড় করে, কারো খেজুর গাছের রসের হাঁড়ি ভেঙ্গে চুপি চুপি মায়ের কাছে ফিরে এলে সব অভিমান জল হয়ে যেত।


কতবার যে কত কারণে কয়েকজন দল বেঁধে এভাবে মধুমতী পার হয়ে অথবা বঙ্গবন্ধুর বাড়ির কাছে
অভিমানে গিয়ে সন্ধ্যায় ফিরে এসেছি!


ঈদের উৎসব আর আমাদের ছোটবেলাটা লুকোচুরি  খেলেছে বেশুমার।
আজ ঈদ এলে তাই আনন্দ আসে না।
আজ আমিই বাবা হয়ে সন্তানের অভিমান ভাঙ্গতে গিয়ে নিজেই কান্নার জলে স্নান করে ফিরি।


বাবা নাই, কষ্টে দুঃখে ক্ষোভে শোকে  কিংবা অভাবে দুঃখীনি বাংলা মা আমার, আজ আর আঁচলে  মুখ লুকায় না। দুঃখী আঁচল হয়ে মিশে আছে মাটির কোলে।
এখন আর সেদিনের মত ক্ষণিক অভিমান কাজ করে না মনে, বেলা শেষের মান অভিমান আর চলে যাওয়াই হয়ত বা বাকী আছে শুধু।
★★★★★★★★★★★★★★★★★★★
টুঙ্গিপাড়া,