চাইয়া চাইয়া দেহি
আবুল বাশার মোল্লার হাতের লেহার সেই মানচিত্তির খান বানের পানিতে ভাইসা যায়
একাত্তরে নুরু মিয়ার বাড়ি আক্রমনের মানচিত্তির।
কিচ্ছু করবার পারলাম না
নিজি বাঁইচা বুড়া বাবারে বাঁচাবো, না মারে.....

ভয়াল আটাশির বান, বাঁচাতি পারলাম না
যুদ্ধের বচ্ছরের কত্তো পুরেনো দলিল কাগজপত্তর
মোমেন শরীফ আর তা সাঙ্গপাঙ্গদের স্মৃতি


দ্যাশ স্বাধীন কইরা  বীরযোদ্ধারা যহন চকচকে রাইফেল আর কতকি অস্তর নিয়ে ফেরলো
সে কি আল্লাদ, যানু ওনরাই হইত্তা কইত্তা....


খুব বেশীদিন লাগেনি
সমস্ত বিশ্বাস আর ভরসাগুলা যহন ভাইঙ্গা খান খান হইলো,  
সঙ্গের মানুষগুলা প্যাটের ধান্ধায় কেউ চুরি চামারি, কেউ ক্ষ্যাত ক্ষামারে কাজ করতি গেলো তহন আর কি করতি পারে, আমার  কৈশোরকালে ওই কাগজপত্তর গুলা আমার দখলে দেলো মোমেন ভাইজান
তারপর... তারপর  গেলো ঢাকা শহরে


এট্টা সময় ফেরলো ঠিকই
তারও আগে ভাইসা গেলো যুদ্ধের কাগজ
কেডা কেডা একসাথে যুদ্ধ করলো, তার লিস্টি
কয়জন ট্রেনিং পাইছেলো কয়জন পায়নাই
কয়জন জখম ছেলো, কয়জনরে নিজিগি হাতে
মাটি দিতি হলো। কয়জন ইবলিস মারলো
তার ফিরিস্তি
মা বাপরে বাঁচাতে যাইয়া কাগজ গুলা, বাড়ির আরো দামী জিনিসপত্তর ভাইসা যাইতে দ্যাখলাম।


যুদ্ধশেষে ফেরা সাহসীগো মেলা সাধ ছেলো
সব সাধ কি পুরন হয়?  করা যায়?
সময় তো লাগে, লাগে ত্যাগ, ধৈর্য, শ্রম মেধা


আমার খুব কষ্ট হয়, যে কিনা সেদিন ছেলো কমাণ্ডার
যে পিলখানায় পঁচিশে মার্চেরর ভয়াল রাতের জান্তার আক্রমন হতে বেঁচে ফিরে  মানিক উকিলরে সাথে নিয়ে গেমাডাঙ্গার আমবাগানে রাইতের বেলা বৃষ্টির মইধ্যে গঠন করলো মুক্তিযুদ্ধের টিম, সে হইলো না এই দ্যাশের মুক্তিযোদ্ধা, হইলো না তার টিমির কেউ কেউ।
অথচ কত্তজনে যুদ্ধে না যাইয়া আজ বড় মুক্তিযোদ্ধা!
পায় রাষ্ট্রের সম্মান !!  


বাবা যত্তকাল বাঁচলো খালি আমারে কইতো,
"বাঁচাতি পারলি না কাগজপত্তর গুলা ? " মনডা খচ খচ করতো
এহন দেহি যা হইছে, ভালোই হইছে
বহু জীবনের, বহু ত্যাগের,বহু ইজ্জতের বিনিময়ে ওড়ানো লাল সবুজের পতাকার কাছে সব চাতি নাই
সব পাতিও নাই
যা পাই তার তো কোন দাম দেয়ার ক্ষমতা নাই
তয় ক্যান যে এই সময়ডা আসলি কষ্ট হয়
কোনভাবেই বোঝবার পারিনা
===================================
টুঙ্গিপাড়া,