নদীর ধারে নিয়ে আমাকে বললি, একটা গান শোনাও, আমি নদীর স্রোত দেখিয়ে দিলাম
শীতের শেষে আমাকে বললি, ফুল এনে দাও
আমি গোটা ফাগুন এনে দিলাম
খরতাপ চৈতের শেষে আমাকে বললি, আমি তৃষ্ণার্ত আমাকে জল দাও, আমি রুদ্র  বৈশাখী এনে দিলাম
চরম বর্ষিত শ্রাবণ শেষে আমাকে বললি, আমি বত্রিশ নম্বরে যাবো....
চুপ করে থেকে অবশেষে বললাম, আমি তোকে কী করে নিয়ে  যাবো বত্রিশে?
আমি তোকে কী করে দেখাবো ব্যস্ত সাইকেলে এখন আর চড়ে না শিশু শেখ রাসেল
কাঁদতে কাঁদতে বললাম, আমাকে যেতে বলিস না
বত্রিশে, ওখানে বাবার ছোপ ছোপ রক্তের দাগ
ভাঙ্গা কাচের টুকরা, ক' টা গুলির খোসা, শূন্যতা
দেয়ালের নীরব সাক্ষী যেন বলে ওঠে,
বসন্তে ফুটলেও ফুল, আমার বাংলাদেশে এখনো আসেনি সুখ বসন্ত
এখনো অভুক্ত জননী,
তার কোল জুড়ে কান্নারত আমার ভবিষ্যৎ।


সূর্য ওঠার এই বছর পঞ্চাশেও
বাবা,তুমি বেঁচে থাকলে অমন করে হিংসায় পুড়তো না এই রোদ্দুর কপাল ,
চরম দারিদ্রে ঔষধহীনে যেতো না আমার জন্মদাতা পায়ে হেঁটে কাঁদতে কাঁদতে স্কুল কলেজ ভার্সিটি হতে ফিরতো না অনাহারী মেধাবী ঔরশ আমার
নিশ্চয়ই জুটে যেত সম্মানীয় পদ পদবী রুজি রুটি এই দেশ মাটির কোথাও না কোথাও।


বল তুই, তোকে নিয়ে কোনখানে যাবো আমি দারুণ রুদ্র এই অসুখের দিনে ?
কোন পাতালের সুখ এনে দেবো তোকে গহীন দুয়ার!
নিত্য টানে ফাগুন যদিও আসে আর যায়
মনের ফাগুনটি পাই যে কোথায় !!
★★★★★★★★★★★★★★★★★★★★★★
টুঙ্গিপাড়া,১৫/০২/২১