৩০/০১/২০২০, সময় – বেলা – ১১-০০টা
আমাদের শৈশবকাল !
বড় গাছের ডালে উঠে উপর থেকে
খালের প্রবল স্রোতে দিতাম ঝঁাপ
স্রোতের টানে অনেক দূর গিয়ে
কূলে উঠে দুরন্ত কৈশোরকে করেছি বাজীমাত ।
ইচ্ছেমত বনে-বাঁদাড়ে ঘুরে বেড়াতাম
মনের সখে পাখির বাসা ও ছানা খুঁজতাম
সকাল বিকেলে ক্ষেতের আলে ফাঁদ পেতে
পাখিদের ধরে উঠতাম আনন্দে মেতে
মিছেমিছি খেলতাম চোর-পুলিশ খেলা
রাতে থাকতো এগুলো হৃদয় মাঝে গেঁথে ।
ধুলো-বালি কাদা মেখে খেলে যেতাম সারাবেলা
সাথীরা মিলে দৌঁড়াদৌড়ি-ছুটাছুটিতে বসাতাম আনন্দের মেলা
নাড়াক্ষেতে খেলতাম মোরা হা-ডু-ডু, ফুটবল, দাড়িয়াবান্দা, গোল্লাছুট
দু’দলে ভাগ হয়ে বাঁধতাম আমরা জেতার তরে জোট ।
দলবেঁধে সবাই পুকু্রে খুব সাঁতার কাটতাম
শাপলা-শালুক তুলে এনে মনের সুখে খেতাম
পুকু্রে মাছের ডালা পরলে ধরতাম সবাই মাছ
এখন নেই সেই কত রকমের মাছ আর শত প্রকার গাছ !
মাঝে মাঝে গ্রামের ছেলেমেয়েরা করতাম বনভোজন
ভোজনের চেয়ে বেশী হতো দুষ্টুমি ও খুশীর আয়োজন
অনেক সময় খালের মুক্ত চরে বসে দিতাম প্রকৃতির ডাকে সাড়া
গল্প করতে করতে বালিতে আকাঁআকিঁ করে খেলতাম আমরা ।
জ্যোছনা রাতে অনেকে মিলে যেতাম পাড়ার মেজবানে
আড্ডা, ফূরতি, খাওয়া-দাওয়া, হৈচৈ-তে সব মিলে স্বজনে ।
খেতাম শীতকালে খেজু্রের রস, শীতের পিঠা, ও বর্ষাকালে খই
ছিল গাভীর দুধে দই, এখন এসব শুধুই কল্পনা পায় যে আর কই !
ট্রেনে চড়ে শহরে যেতাম আনন্দ আর নাহি ধরে
দেখতাম হলে সিনেমা বাড়িতে এসে দিতাম গল্প জুড়ে ।
স্কুলে যেতাম লুঙ্গি পরে মেঠো পথে হেঁটে হেঁটে খালি পায়ে
আধুনিকতার ছোঁয়া আসেনি তখনো অজ পাড়াগাঁয়ে ।
আগেকার দিনের সবকিছু আজ হারিয়ে গেছে কালের ঘুর্ণন চাকায়
আধুনিকতার চরম উৎকর্ষতায় গাঁগেরামের প্রকৃতির ঐসবের নেই যে আর ঠাঁই !
(নাড়াক্ষেত – ধান কাটার পর ধান গাছের গোড়ার অংশযুক্ত জমি )
শরীফ নবাব হোসেন ।