২৪/১১/২০১৯, রাত-৯-৩৫ মিনিট


গ্রামটির নাম মন্দাকিনি


গ্রামের দু’পাশ দিয়ে বয়ে গেছে
দু’টি প্রবাহমান খালের স্বর্গীয় স্রোতধারা,
একটি মন্দাকিনি, অপরটি শোভনছড়ি,  
ওদের সৃষ্টি সীতাকুন্ড পাহাড় থেকে ।
বর্ষাকালে পাহাড়ী ঢলের পলি দিয়ে
এরা এদের দু’কুলকে করেছে উর্বর,
নতুন পলি দেখতে মনে হয় পনির, মাখন
প্রাণ ভরে খাওয়া যাবে ।


দুই খালের কূলে গড়ে উঠেছে মন্দাকিনী গ্রামটি,
সবুজে শ্যামলে ভরা,
যেখানে নিরন্তর ফলে শত শাক-সব্জী,
ফসল, ধান আর ফল গাছ ।
শীতকালে নানা শাক-সব্জীতে ভরে যায় গ্রামটি,
আলু, বেগুন মুলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি,
বরবটি, শিম, লাউ আরো কত কী !
দেখতে লাগে এটি একটি ফুল-সব্জীর গ্রাম ।


এরিই  সাথে ঝরণা দু’টির শীতল জল
পশু-পাখি, ক্ষেত-ফসলের তৃষ্ণা মেটায় ,
আর সন্তানদের দেহ- মনকে করে শীতলতর ।
প্রাকৃতিক উর্বরতার সুবাদে গ্রামের
শাক-সব্জী, ফসল গুলো খুবই সুস্বাদু,
তাই লোকজন বলে বেড়ায়,
মন্দাকিনীর তরকারী স্বাদে-গন্ধে তুলনাহীন ।


গ্রামের এত জৌলুস, এখন প্রায় অতীত !
নগরায়নের বর্ধিত লোলুপ থাবা একে করেছে ছারকার !
চারিদিকে ইট ভাটা ও কাল ধোয়া,
পরিবেশকে করেছে দূষণ ও গাছপালা শূন্য ।


আগেকার সে ঝোঁপ-ঝাড়,বৃক্ষলতা, বনজঙ্গল
বেতবন, পাখির কলরব,ঘন-সবুজ ধানক্ষেত,
রাখালের গরুর পাল,
গরু-লাঙ্গলের জমি চাষ,
ধান কাটা, ধানের ভার আনার দৃশ্য,
এখন আর  পায় না  শোভা ।  


খাল গুলো ও তাদের প্রবল পাহাড়ী ঢলের
সে ভরা যৌবন হারিয়ে,
এখন আনেকটা মনমরা,
শীতের শেষে গাছ-পালার  যে রুপ হয় ।


মান্দাকিনীর এমন রুক্ষ-খরা চিত্রের
চেহারা বদলাতে হলে,
কৃষক সমাজকে আবার পুরোদমে,
চাষাবাদে ভরে তুলতে মাঠ,
ফসল ফলাতে হবে বারো মাস,
তবে গ্রামটিতে হবে সবুজ-শ্যামল-অরণ্যে  ভরা
প্রকৃতির নিবীড় কোলে বসাবাস ।।


শরীফ নবাব হোসেন, স্যাম্ব, মীরবাড়ী, দেওয়ানহাট ।