০৭/০২/২০২০, সন্ধ্যা – ৬-৩০ মিনিট


সেকাল – একাল  ! !


সেকাল !  


সেকালে আমরা মেঠোপথে খালি পায়ে হাঁটতাম  
পল্লীগীতি, ভাটিয়ালি ও সিনেমার গান গাইতাম
পান্তাভাত, দই-মুড়ি, খই  খেতাম
দড়ি বেঁধে  বই নিয়ে অনেক দূর স্কুলে যেতাম
বনে জঙ্গলে  ঘুরে বেড়াতাম,খালে বিলে মাছ ধরতাম
ধান – ফসলের ক্ষেতে যেতাম, নিজ হাতে ফসল তুলতাম
গাছে উঠে নানা রকম ফল পারতাম
বর্ষায়  খালের ভরা ঢলে ঝাঁপ দিতাম
স্রোতে  ভেসে যেতাম, সাতরিয়ে আবার কূল ধরতাম
মেলায় সার্কাস  দেখে এসে
শীতের নাড়া মাঠে সার্কাস  সার্কাস  খেলতাম
স্বাধীনতা যুদ্ধের পর পর
মুক্তিযোদ্ধা  ও পাঞ্জাবী সেজে দু’দলে যুদ্ধ  যুদ্ধ  খেলতাম
দৌড়াদৌড়ি, ছুটাছুটি, হৈচৈ করে খেলে
আনন্দে  সারা পাড়া  মাত করে রাখতাম
খুব ভোরে উঠানে গরু দিয়ে মাড়ায় দিত ধান
কুয়াশায় ভেজা গায়ে চলত হুক্কা, শীতপিঠা ও পল্লীগান ।
হাটের দিনে গ্রাম্য হাটে সে কী আনন্দ
হাজার রকম সতেজ পসরা দেখে ও কিনে হতাম ধন্য
তখন দেশে ছিল গরু, মহিষ ও ঘোড়ার গাড়ী
তা দিয়ে মানুষ ও নানা জিনিস  বহনে ছিল না জুড়ি
যোগাযোগের জন্য ছিল চিঠি ও হাতে ঘুরানো ফোন
তাতে এখন জমেছে ধুলো, ধরে গেছে ঘুণ
সভ্যতার বিবর্তনে সব গেছে এখন পাল্টে  
ঝাপসা স্মৃতিগুলো বেঁচে  আছে জীবন পাতায় উল্টে
কালের চাকায় পিষ্ঠ  হয়ে  ভিন্নরুপ এখন ললাটে !  
  
একাল !


একালে এখন জীবন অন্য রকম
নিত্য-নতুন মডেলের গাড়ীর ভীড় রাস্তায়
শত বাদ্যযন্ত্রের কবলে ব্যান্ডের গান পস্তায়
দোকানে, রেস্তোরায় অগণিত  ফাস্টফুড শোভা পায়
কিশোর-তরুণেরা ফুল-মূল ও পিঠাপুলির বদলে কপিহাউজেই  যায়
ভেজালে ভেজালে জীবনের আর গতি ও স্বস্তি  না পায়
গাছে উঠে ফল-ফলাদি পারার অবকাশ কারো নাই
মাঠও নাই, খেলা-ধূলাও নাই, মোবাইলেতে সব সুখ খোঁজে পায়
এখন আর গ্রামের হাটের সেই আমেজ নাই
সুরম্য শীততাপ অট্টালিকার মার্কেটে সবকিছু হারিয়ে যায়
যোগাযোগে এখন ২৪ ঘণ্টা মোবাইল, ইমেইল, ফেসবুক
সারা দুনিয়া সবসময় হাতের মুঠোয়, আহা কী সুখ !


শরীফ নবাব হোসেন , স্যাম্ব , মীরবাড়ী, দিওয়ানহাট, চট্টগ্রাম ।