বাক্যটা শোনার পর থেকে প্রতিক্রিয়াহীন
সত্যি বলছি,
বিশ্বাস হচ্ছে না?
অ্যা, বলো কী তুমি?
আমার কথা বিশ্বাস করে না…
কত বড় স্পর্ধা
বিশ্বাস করে না!


কাছে আয় তবে টুটি চেপে ধরে বিশ্বাস করাবো তোকে
মাথার চুল খামচে ধরে বলবো
‘কবিরা কখনো মিথ্যে বলে না’
হ্যা, আমি মিথ্যা বলিনি,
নীললোহিতের জন্য একবার ও করিনি আহা উহু
খবরটা শোনার পর লাফ দিয়ে ঊঠে খুলিনি টিভি
কেদে ঊঠিনি একবারো অজান্তে…


কী হবে, কেন, কাদবো কেন?
ওর শরীর গ্যাছে তাতে আমার কী?
আমি কী ওর শরীর ভোগী, কিংবা দেখি?


আরো পষ্ট করে বলছি শুনে রাখ সবাই,
ঘরোয়া কোন আড্ডা,
সাহিত্য সভা কিংবা বৈশ্বিক হাটুরে কোন কবিতা মেলায়
ওর থাকা না থাকায়
আমার মত লক্ষ লক্ষ নীল কবিতাখেকোর
কিচ্ছু যায় আসে নি এ্যতদিন, আসে না।
ওর শরীর দিয়ে কী আমরা
ঝোল খাবো?নাকি হাড় দিয়ে ঢেকি বানাবো??
ওর শরীরের যাওয়া না যাওয়ায়
কিচ্ছু আমার যায় আসে না।


শুধু বলবো
আমার কাছে নীললোহিতের থাকা মানে নীরা আর নিখিলেশ।
নীরা, যে নারী “লঘু মরালীর মত” হেটে যায় বুকের খুব কাছ থেকে,
যে নিখিলেশ কাধে একবার হাত রাখলেই
বলে উঠি, “আমি কী রকমভাবে বেচে আছি তুই এসে দেখে যা নিখিলেশ”!
নিখিলেশের সাথে আমি ও “জীবন বদল” করে দেখবো একবার
একটি বারের জন্য হলেও চাইবো
একটি মাত্র “ব্যক্তিগত জিরো আওয়ার”,
দেখবো নীল লোহিতের নিঃশ্বাস কত শুদ্ধ ছিল।
ওর শরীরের থাকা না থাকায় তাই
এখন আর কিচ্ছু আমার যায় আসে না।


আমার কাছে নীল লোহিতের থাকা মানে বলা
নারী কিংবা নীরা, একবার শোন,
“সমস্ত শিল্পের সার তোমার ও মুখের বর্ননা
কালহীন, বর্নহীন
প্রতিশব্দহীন”
“সূর্যকরোজ্জল হ্রদের কিনারে ভালেরীর মত” আমিও খুজে পাব না “কোন প্রার্থিত শব্দ
কিংবা “উদ্ভাসিত কোন প্রতিবিম্ব”।
আর নিখিলেশ!
হ্যা, ওর কাছে আমারো জমে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত অনেক ঋণ।
নিখিলেশ!তবে তুই সাক্ষি থাকিস
মধ্যরাতে আমিও ওর কলকাতা খুনের দোসর হব
ওদের সাথে সহমরনে স্বেচ্ছায় যেতে রাজি থাকবো।


যতদিন তবু বেচে আছি
শুধু নীলের কবিতার জন্য,
শুধু তার কবিতার জন্যই এই “খেলা…
একা হিম সন্ধেবেলা
ভুবন পেরিয়ে আসা”
অমরত্ব তাচ্ছিল্যের অনুপ্রেরণা ও ছাড়া আমাকে আর কেইবা দিতে পারে,
পারবে কী আর কেউ?
তাই ওর শরীরের থাকা না থাকায়
এখন আর আমার কিচ্ছু যায় আসে না।
নীল লোহিতের শরীরের থাকা না থাকায়
আমার কিচ্ছু যায় আসে না,
সত্যি বলছি, বিশ্বাস হচ্ছে না?
তবে একবার আমার দিকে তাকিয়ে দেখো,
কত উদ্ভাসিত, কত শোকতাপহীন
এই আমি!
নীল লোহিতের সমস্ত কবিতার শব্দ ফুটে আছে পদ্ম হয়ে
এ হৃদয়ে, চোখের পাতায় ঝরে জল হয়ে,
এই হৃদয়, এই চোখ কখনো কী আর মিথ্যে বলতে পারে?