পিথিয়া,
সবকিছু কেমন যেন বদলে গেছে, তাই না?
এই যেমন ধর,
তোমাদের ব্যস্ত শহরের ধূলা বালি এখন গায়ে লাগে না।
আমার নীল শার্টটাও এখন আর ময়লা হয় না
দিব্যি ভবঘুরে সাজি দিনের পর দিন এক শার্টটে।
তারপর, ৩২ নাম্বারের ওভার ব্রিজের বাম পাশে বসা যে মামাটা দশ টাকায় একটা ব্যানসন আর তোমার জন্য একটা চকলেট দিত,
এখন তাকে দশ টাকার সাথে আরও একটাকা দিতে হয়
চকলেট দেয় না, শুধু একটা শলাকা
আমিও আর আবদার করি না
চকলেট আমার ভালো লাগে না।
আচ্ছা, তুমি কি এখনও ঐ এক টাকার আম চকলেট পছন্দ কর?
তোমার মনে আছে,
এইতো মাত্র কয়েকটা বছর আগের কথা
শীতের রাতে তুমি সিলিং ফ্যান ছেড়ে কথা বলতে,
তোমার বাবা মা'র কি এখনো একটু অল্প শব্দে ঘুম ভাঙে?
আর আমি বারান্দার দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতাম
কথার মাঝে ঘুমিয়ে যাবার অভ্যাসটা যে তোমার বড্ড অপছন্দ।
তারপর আমাদের কত কথা, কত পরিকল্পনা
আমাদের বিয়ে, সংসার, বাচ্চা, তাদের নাম আরও কত কি!
আচ্ছা, মোহাম্মদপুরের সেই বুড়ো চাচার চায়ের কথা মনে আছে?
রাস্তার পাশে বসে টোঙের দোকানের চা খেতে খেতে,
কতশত স্বপ্ন  দেখিয়েছি তোমাকে।
নাহ! আমি কথা রাখিনি।
কিন্তু বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে, রিক্সার ভেতরে জড়িয়ে ধরে,
আর কত রেস্টুরেন্টে হাতে হাত রেখে
তুমিও তো কত কথা দিয়েছিলে,
তুমি বোধহয় আজ মনে রাখনি।
জানো, এখন আর কেউ নিকোটিনের প্রেস্ক্রিপশন করে দেয়না
দিনে দুইটা আর রাতে একটা।
অনিয়মের প্যাকেট শেষ হয় প্রতিনিয়ত।
আচ্ছা, তুমি কি এখন একাই রিক্সায় উঠো?
অহ! তোমাদের তো গাড়ি আছে।
কে যেন বলেছিল! ভুলে গেছি।
আচ্ছা, গাড়িতেও কি তুমি কাউকে জড়িয়ে ধরে বস?
এখন দিনের শেষে,
আমাকে ঘিরে ধরে তুমি নামক সব উদ্ভট চিন্তায়
সিগারেটের ধোয়া উড়া আমার ছোট্ট ব্যালকনিতে।
তখন হলুদ খাম বন্দি তোমার কথা গুলো,
কানের মধ্যে বাঁজতে থাকে, বারংবার।
গাঢ় নিঃশ্বাসের সাথে বাড়তে থাকে রাত
শূন্য অবসরে,
থমকে যায় নিস্তব্ধতা
শুরু হয় জীবন্ত লাশের বিষণ্ণতায় বিষাক্ততার আর্তনাদ।
তারপর, তুমি নামক অপেক্ষা,
আমার ঘড়ির তিন কাঁটায়।
(০৩/০৩/২০১৮)