কে জানে কেন যে তোমার শহরে
পাচ্ছে না কেউ বৃষ্টির ঘ্রাণ,
মৃত্তিকা হিমে মাখছে না ঘরে
কেউ শান্তির শুভ শুচি প্রাণ।


তেমনই আমার মনের শহরে
অনিয়ত ঝড়ে পাখিরা স্ত্রস্ত,
জোছনা হটানো নিয়ন চাদরে
মন মেকি কোনো আসরে মত্ত।


পাখিদের মতো আমারও বিহারে
শহরের সাথে ছিলো যে প্রণয়,
রোদ ছায়া ঝড় কিংবা আঁধারে
আমিও খুঁজেছি তারই আশ্রয়।


মনে কি পড়ে একদিন এই
শহরই আমায় করেছিলো পর,
আপোষ করিনি হয় তো বা তাই
আশ্রয় বরে ঠুকেছিলো কর।


শহরের সাথে আমারও তো ছিলো
এক জনমের আত্মিক যোগ,
তোমার মতো পুষেছি আমিও
শহরের টানে টিকে থাকা রোগ।


এখন কেন যে অসুখটা আর
পারে না গলাতে পরবাসী মন,
শহরও পাথুরে, বুকে নিয়ে ভার
স্মৃতি চাপা দিয়ে কাটায় জীবন।


শহর অচর নির্বাত, কাঁপে
অভিমানী তার জমিন আকাশ,
মোরা ধাবমান বিদারণ শাপে
মন্থর শ্বাসে বাঁচি বারোমাস।


দুজনই খুঁজেছি পরিবর্তন
এনেছি বদল লাভ জুত বাঁক,
জীবন যজ্ঞে বহু অর্জন
শুধু হারিয়েছি পাখিদের ডাক।


হারিয়েছি মিতা পৌষের রোদ
গ্রীষ্ম শরত বারি বসন্ত,
পাই না দেখতে শস্য জরদ
ধূসর এখন প্রিয় হেমন্ত।


ঋতুহারা দুখে দুই দুখী আজ
কেউ নই আর কারও যে আপন,
এমনই বিরাগী তোমার আমার
দুই শহরের জীবন যাপন।