বর্ষার রাত
চারদিকে থৈ থৈ পানি
সেদিন আকাশে ছিল পূর্ণিমার চাঁদ
দূর গাঁয়ের কিনার ঘেঁষে জোনাকির অপরূপ নৃত্য
মৃদু বাতাসে নদীর জলে জ্যোৎস্না ও ঢেওয়ের লুকুচুরি
নৌকার মাঁচায় তোমার কোলে মাথা রেখে তাঁরার মেলা দেখছি
দখিনা বাতাসে নৌকার পাল বেলুনের মত ফোলে আছে
আমার মাথায় তোমার আলতো হাতের আদর
আবার মাঝে মাঝে মধুর খুনসুটি
ভুলতে পারিনা সেদিনটি
তুমিও কি!


সেদিন দুজনে
স্বপ্ন দেখেছি একটি ছোট্ট ঘর
ফুলে ফলে ঘেরা একটি প্রেম নিকুঞ্জ
দুইজনে মিলে আমরা গড়বো একটি সুখের স্বর্গ
যেখানে থাকবে আমাদের মাঝে শুধু প্রেম আর অনুরাগ
কখনোবা একটু আধটু অভিমান আবার আদর করে মান ভাঙানো
প্রেমের জোয়ারে হাসি আর গানে আমরা আনবো মুক্তি
আদরে আদরে আমাকে খাওয়াবে ঘুম পাড়াবে
তোমার কি মনে পড়ে সেই সুখক্ষন
পারিনা ভুলিতে আমি
তুমি পার কি?


রসিক মাঝি
মনের আনন্দে দাঁড় টানছে
মাঝ নদীতে হটাৎ দাঁড় থামিয়ে দিয়ে
বলে ‘স্যার, আপনেরা কি পেরেম করইন’
দুইজনেই এক সাথে হেসে উঠে বলি ‘কেন বলতো’?
মাঝি হেসে বলে ‘পেরেমে হুব কষ্ট আমিও পেরেম করছিলাম,
যানুইন হে আমারে হুব বালোবাসে, তো কি অইছে!
পেরেম করলে মা-বাপে বিয়া করাইত চায়না
পরে দুইজনে পলাইয়া বিয়া করছি,
ছমাস বাড়িত জাগা দিছেনা
অনেক কষ্ট’!


আমাদের সাথে!
আমরাতো লেখাপড়া জানা মানুষ
আমাদের সাথে কখনোই এমনটি হবেনা!
আজ তোমাতে আমাতে যোজন যোজন দূরত্ব
সেদিন বুঝিনি মাঝির কথাগুলো কতটা নির্মম সত্য
যুগেযুগে ছোটবড় সবার সাথেই ভালোবাসার এমন আচরণ
গাঁয়ের সে মাঝির কথাগুলো ভেবে আজো চমকে উঠি
তবে কি ভালোবেসে কেউ ঘর বাঁধতে পারবেনা?
ভালোবাসলে কি সবাইকে কষ্ট পেতে হবে?
তবে কেন এত সুখের আশা
এত ভালোবাসা!
****
রচনাকালঃ ৭ নভম্বের ২০১৫