ফুলের মতো কোমল দেখে বাসতে পারো ভালো,
আঁধার ধরায় জ্বালতে পারি লক্ষ তারার আলো,
হিংসা-বিষের পাত্র ভরে আনতে পারি সুধা,
তৃপ্তি দিয়ে পূরতে পারি বিশ্বগ্রাসী ক্ষুধা,
নরম বলে শক্তিহীনা ভাবছো তুমি যাকে
স্মরণ রেখো - গোলাপ ফুলে কাঁটাও জেগে থাকে।


জন্ম থেকে হাজার শিকল, হাজার খাঁচার তলে,
চুঁইয়ে পড়া আকাশ-বাতাস প্রাণ জুগিয়ে চলে,
নীচের আসন বরাদ্দ যার, তারই হাতে গড়া
অস্ত্র পেয়ে ধরাকে আজ জ্ঞান করেছ সরা।
বঞ্চনা আর গঞ্জনাতেই বেড়ে ওঠার সার
জুটিয়ে নিলাম, তিতিক্ষাতে শক্ত হল হাড়


চাওনি ফিরেও, ভাবোও নি তো - যাকে চেপেই দিলে,
তার ফসিলেই মরণ তোমার বাড়ছে তিলে তিলে।
আকাশজোড়া বিজয়কেতন ওড়াও অহঙ্কারে
স্তম্ভ-সমান দম্ভ তোমার নিত্য কেবল বাড়ে।
বাহুবলে যে জন বেশী, সিংহাসনে সে -
পেশীর জোরই সর্বসেরা তোমার রাজত্বে।


পশ্চিমে ওই রক্তরাঙা দিগন্তে দ্যাখ্ চেয়ে
ঝোড়ো হাওয়ায় নিয়তি তোর আসছে কেমন ধেয়ে
উড়িয়ে নেবে পতাকা তোর, গুঁড়িয়ে দেবে বাতি
মুকুট রে তোর পড়বে ধূলায়, ভাঙবে বুকের ছাতি।
পৌরুষের ওই গর্ব ছিল তোর যে পেশীর বলে,
শেষে তাতেই চূর্ণ হবি নারীর চরণ-তলে।