বয়স বাড়লে তোমার সাথে যাবো
নিশ্চিন্তপুর!
রেলগাড়ির জানালায় মুখোমুখি বসে
চোখে চোখ রেখে কপালের বলি রেখা গুনবl
বাইরে তখন খুব আওয়াজl
দূরের গাছ পালার মত সরে সরে যাচ্ছে আমাদের তিরিশ টা বছরl
ছুটে চলে যাচ্ছে পুরনো দিন, কলেজ
শান্তিনিকেতনের আড্ডা, পাকা কথা, গাত্রহরিদ্রা
কুসুমদিঘে..
রেলের চাকায় পিষে যাচ্ছে সব ব্যথা যন্ত্রনাl
কেমন উদ্ভ্রান্তের মত আমি তাকিয়ে আছিl
তোমার মুখের দিকে, সিনেমার পর্দার মত সব ছবি
একেক টা দিন, একেক টা বছর চোখের সামনে দিয়ে চলে যাচ্ছে!
তোমার হাতের আঙুল তখন চায়ের উষ্ণতা পাওয়ার জন্য ছটফট করছেl
যাত্রী দের আনাগোনা, ফেরিওয়ালা চিৎকার করে বলছে স্বপ্ন বিক্রি আছেl
কিন্তু দাম তো অনেক!
না ওর কাছে কোনও মধ্যবিত্ত স্বপ্ন নেইl
আমাদের দু কামরা ফ্লাট বাড়িটা ওর ঝুলিতে নেইl
আমাদের না শোধ হওয়া ই এম আই টার খবর
ও জানেনা!
আমাদের বাড়ির সামনের ছোট্ট ঘাস জমিটার কথাও জানে নাl
তুমি বরঞ্চ আকাশ দেখl
এই তিরিশ বছরে
কতদিন তুমি আকাশ দেখোনি!
তুমি কোনও দিন বৃষ্টি তে ভেজনি!
যখন পানসে দুপুরে একলা তুমি
ছাদে কাপড় মেলবে,
তখন মেঘ নেমে এসছে হটাত,
সেই মেঘ গায়ে মাখনিl
তুমি খুব ভোরে উঠেছ,
বাইরের ঘাসে ছিল উচ্ছল শিশির!
তুমি পা দাওনি সেই ঘাসেl
একটা একটা করে স্টেশন পার করে চলেছিl
নিশ্চিন্তপুরl শান্ত দুপুর,
কেউ না কেউ নেমেই যাবেl
তুমি শক্ত করে ধরে রাখ আমার হাতl
কিছুতেই নামতে দেবে নাl
আমিও নামতে দেব না তোমায়l
আসুক সময় আমরা রুখে দাঁড়াবোl
তুমি কিছুতেই হাল ছেড়ো নাl
জেনে রেখো বয়সটাই শুধু বেড়েছেl
তাই বলে নেমে যাবো একলা?
একথা দুজনে দুজনকে বলি নি কখনও
বলেছি কি? তাহলে থাকনা চোখে চোখ রেখে এমনি বসে থাকা নিশ্চুপ!
সময় কে তাড়িয়ে নিয়ে
দুরে ছুটে যাক অবাধ্য রেল গাড়ি!