জনম মোর পথে ঘাটে
ভাগ্যে ছিলোনো স্বর্ণ চামচ, খাইনি পদ্ম মধু
অঝোরে ঝড়েছে বারি ধারা সূচ ক্রন্দনে
জীর্ণশীর্ণ কুটিরে নিভে নিভে কুঁপি বাতি জ্বলে
মায়ের নিথর দেহ পড়ে আছে পাশে
তবুও মায়া দৃষ্টিতে মা তাকিয়ে মোর দিকে
পলকহীন চোখে অবাক বিষ্ময়ে,বারিযে তারও ঝরে !


জীবন জীবিকার অচীন পথে
অনাহারে অর্ধাহারে বড়ই অনাদরে
মোদের জীবন থমকে দাঁড়ায়, ফের চলে
একটু বড় হলাম, খুঁজি বাবাকে
বাবা তখন নেইকো পাশে, ছোটমা নিয়ে বহুদূরে
মাকে আর আমায় অথৈ জলে ভাসিয়ে দিয়ে
কন্টকময় পদে পদে চলি বিচিত্র ধরাধামে !


এভাবেই জীবনের বারোটি বসন্ত হলো অন্ত
আজও দিন রাত কাটে মা’র বাসন মেজে
এ বাড়ি, ও বাড়ি, সে বাড়িতে-বকাঝকা খেয়ে
দু’বেলা দু’মুঠো অন্ন দিতে মোর মুখে
তবেই চিন্তারেখা অদৃশ্য হয় মার ভালে !
যেতে চাই মার সাথে কাজে, বকিস না বাজে ?
বাবা নেই তো কি হয়েছে, মা তো তোর আছে পাশে!


এভাবেই জীবনের বছর বসন্ত পার, ষোঁড়ষী শেষে
গার্মেন্টে ওভারনাইটে যেতে হবে ম্যানেজারের সাথে
ভয়ে শিউরে উঠি, যাই ছুটে শহরে সিগনাল বাতির পাশে ফুল বেঁচতে
সেখানেও হুরপরি ডেকে হাত ধরে নিয়ে যেতে চায় মার্সিডিজের ভেতরে
কি করতে হবে ভেবে না পেয়ে ফের ছুটে যাই মার পানে
হঠাৎ মা চলে গেলো জটিল রোগের ঘরে, একাকী ফেলে
মা হারিয়ে থাকি নির্জন ঘরে, পড়েনা আখির পল্লভ অপরের পরে
নেই আপন কোনো জন, মা নেই বাবা নেই, স্বজনহারা বছর গত
নিকষ কালো বজ্র মেঘের বজ্রপাত, যন্ত্রণাময় সেই রাত
পড়শী বুড়োর যাতাকলে সতীত্ব হারা ,কলঙ্কে ঢাকা পড়ে আজ আমি সর্বহারা !


---শামছুর রহমান
রচনাঃ ২৮ অক্টোবর-২০১৬ খ্রি. রাত ১টা ৬ মিনিট। শাহজাদপুর।