আবার যুদ্ধ হবে


আবার যুদ্ধ হবে মানুষে-মানুষে
রক্ত ঝরিবে, ঘাম ঝরিবে, আগুনে জ্বলিবে
মিলিয়ন মিলিয়ন শরীর, ঘাসের মত,
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মত এটম ফাটিবে
হিটলারের মত শাসক থাকিবে, তার চেয়েও ভয়ংকর।
আবার যুদ্ধ হবে মানুষে-মানুষে
তখন আর দেশে দেশে যুদ্ধ হবে না
যুদ্ধ হবে রক্তে-রক্তে, মাংসে-মাংসে, শরীরে-শরীরে।
লাশের স্তুপ, লাশের গন্ধ, জীবিত মানুষও লাশ হবে
নিজেকে বাঁচাবে—ছদ্মবেশী লাশ।
আবার যুদ্ধ হবে মানুষে-মানুষে
যেখানে সবি মানুষ রূপি অমানুষ থাকিবে!
সবাই বলিবে আমি মানুষ, আমি মানুষ
মানুষ-মানুষের রক্ত চুষিবে, খুবলে খুবলে মাংস খাবে
চোখ থাকিবে না, সমাজ থাকিবে না,
যুদ্ধ করিবে ক্ষমতা নিয়ে, শক্তি নিয়ে,
ভাত নিয়ে, সততা নিয়ে,
যুদ্ধ করিবে চরিত্র নিয়ে, রুক্ষতার শক্তি নিয়ে।
আবার যুদ্ধ হবে মানুষে-মানুষে
রূপ—সৌন্দর্য্য, অহংকার, লোভ, ধৈর্য্য নিয়ে
ঘরে ঘরে যুদ্ধ হবে, রুমে রুমে যুদ্ধ হবে
যুদ্ধ হবে রক্তে রক্তে, চোখে চোখে।
আবার যুদ্ধ হবে মানুষে-মানুষে
নারীর নগ্ন শরীর নিয়ে, ভালোবাসা নিয়ে
কবর, চিতা, শ্মশান নিয়ে, মৃত্যুর যন্ত্রণা নিয়ে
সখ, ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা, সুখ, আনন্দ নিয়ে
আবার যুদ্ধ হবে মাংস,রক্ত, লাশ নিয়ে।


আবার যুদ্ধ হবে মানুষে-মানুষে
ভাষা, শব্দ, অক্ষর, বর্ণ, নিয়ে
মাটি, পানি, গাছ, পাখি, প্রকৃতি, সৌন্দর্য্য নিয়ে
আল্লাহ, ঈশ্বর, গড, নিয়ে
আবার যুদ্ধ হবে দুঃখ, যন্ত্রণা, বেদনা, কষ্ট নিয়ে।
মানুষ সে দিন মানুষ থাকিবে না!
মানুষ হবে মাটি, পানি—
মানুষ সে দিন যুদ্ধ করিবে নিজেদের সাথে
রক্তে রক্তে, মাংসে মাংসে, শরীরে শরীরে।
আবার যুদ্ধ হবে মানুষে-মানুষে
হিংসা, বিদ্বেষ, অহংকার, লাল চোখ নিয়ে
বুদ্ধি, শিক্ষা, বই, কলম, খাতা নিয়ে
স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি, মাদ্রাসা, নিয়ে
আবার যুদ্ধ হবে নারী, লিঙ্গ, স্তন, যৌনাঙ্গ নিয়ে।


আবার যুদ্ধ হবে মানুষে-মানুষে
স্বপ্ন, আশা, ভালোবাসা, প্রেম-প্রেমিকা নিয়ে
প্রেমিক-প্রেমিকের মাঝে যুদ্ধ হবে—
ক্ষত-বিক্ষত হবে শরীর, মন, আত্মা,
আবার যুদ্ধ হবে ফুল নিয়ে, আলো নিয়ে, শরীর নিয়ে,
ঘরে ঘরে খুন হবে মানুষ, মানুষের হাতে,
লাশ নিজেরাই মাটি চাপা দিবে ঘরের ভিতরে
আবার যুদ্ধ হবে মানুষে-মানুষে
আলো, বাতাস, অন্ধকার নিয়ে
নারীর শীষ নিয়ে, নারীর কাজ, চরিত্র নিয়ে
নারীর কথা, চোখ, ধর্ম, বিলাসিতা, হাসি নিয়ে।
আবার যুদ্ধ হবে ক্লেশ, মন, দেহ, চুল
অন্ধ, বন্ধ, নারীর নাক, নিতম্ব, উরু, পা নিয়ে
আবার যুদ্ধ হবে পুরুষের লিঙ্গ নিয়ে।


আবার যুদ্ধ হবে মানুষে-মানুষে
ঘুম নিয়ে, শোয়া নিয়ে, চোখ বন্ধ নিয়ে,
বিছানা, ঘর, খাট, নকশি কাঁথা, কম্বল নিয়ে
আবার যুদ্ধ হবে অহেতুক কারণ নিয়ে—
হাঁটা, বসা, গল্প করা, হাসি, কবিতা নিয়ে।
আবার যুদ্ধ হবে একলা থাকা নিয়ে
মিলেমিশে, লুকিয়ে, চুপি থাকার কারণে।
আবার যুদ্ধ হবে মানুষে-মানুষে
নারীর সাথে ঘুমালে, নারীর সাথে থাকলে
নারীর চোখে তাকালে, আবার না তাকালেও যুদ্ধ হবে!
আবার যুদ্ধ হবে, যুদ্ধ হবে মানুষে-মানুষে


সব কিছু জব্দ হবে


ট্রাক ভর্তি অস্ত্র আর গনতন্ত্র বিক্রি হয়ে গেছে
চাকরির বাজার আমলাদের হাতে জব্দ
প্রশাসন যখন ব্যাংক ডাকাতি করে তখন—
উন্নয়নের ছোঁয়া একশত ধাপ এগিয়ে গেছে।
সুপরিকল্পিত ভাবে দেশ বিক্রি করছে,
দেশের মানুষও! সন্ত্রাস আর মাফিয়ার
সদস্য দেশের রাজনীতিবিদরা।
অর্থ বরাদ্দের নামে বিলিয়ন বিলিয় টাকা
লুটপাট করে নিচ্ছে যারা? তারাতো প্রশাসনের আমলা—পালিত ত্রাস;
মৃত্যু তাদের কাছে সামান্য খেলা!
জনগণ আর গনতন্ত্র সম্পুর্ণ আলাদা
গনতন্ত্র জোর করে স্বৈরাচারী শাসনে পরিনত করেছে
আর জনগণ মুখে আঙুল দিয়ে বসে আছে!
দূর থেকে গালি-দে কখনও নিজেকে
আবার কখনও পাড়াপ্রতিবেশিকে।


উন্নত হচ্ছে দেশ, উন্নত হচ্ছে অস্ত্রপাচার
উন্নত হচ্ছে দেশের আইন ব্যবস্থা, ডাকাতির।
উন্নত হচ্ছে গনতন্ত্রের নামে স্বৈরাচারী শাসন
উন্নত হচ্ছে খুনখারাবি, সন্ত্রাস, চোর, প্রশাসন।
উন্নত হচ্ছে ব্যাংকের লকার, এটিএম বুথ
উন্নত হচ্ছে চোরাকারবারীর সুশীল খাত।


সাধারণ জনগণও উন্নত হচ্ছে!
চোরদের মাঝে থেকে চুরি শিখছে, ডাকাতি।
সাধারণ জনগণ দিন আনে দিন খায়
তাদের তো কোনো দোষ নেই, রিকশা চালায়
দু'বেলা গাঞ্জা টানে, সিগারেট টানে, অভাব তো নেই,
তারা তো সাধারণ জনগণ, অতি সাধারণ।


সরকার যখন জনগণ, জনগণ যখন সরকার
তখন আলাদা ভাবে প্রশাসন কি— চোর?
গনতন্ত্র নয়তো স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা চাই
দু'খন্ডের মাঝখানে চাপা পড়ে মরতে চাই না।
যুদ্ধ চাই না শান্তি চাই, শান্তি, আরাম চাই আরাম
নয়তো মেরেদে, উন্নত অস্ত্র দিয়ে—সন্ত্রাস ভাড়া করে
শুধু আমাকে আর আমার মত সাধারণ মানুষকে
যারা দিন আনে, দিন খায়, রিকশা চালায়, গাঞ্জা টানে,
কষ্ট ভুলে যেতে চায়, দিনের কষ্ট দিনেই,
রাতে একটু আরাম করে ঘুমাতে চাই, চায়।


শাসন ব্যাবস্থার ভিন্ন রূপ


যে পথের ধুলায় মিশে আছে রক্ত, ঘাম, প্রেম
সে পথে পাপ ছড়িয়ে দিতেছে পাপীরা দল বেঁধে
আধাশিক্ষিতরা পথে কাঁটা দিয়েছে মেলে
সব নাকি তারা দখল করেছে লাল-নীল চোখে।


যে সমাজে শিক্ষিত ছিলো, দ্রোহীর হুংকার
সে সমাজে জবরদস্তি করছে অশিক্ষিতরা
নষ্ট করে দিয়েছে সমাজ, বিচার, সত্যতা, সততা
জোর করে নিজেকে বিচারপতি বানায়।


যে স্কুলে শিক্ষক ছিলো সূর্যের মত উদিয়মান
সে স্কুলে অশিক্ষিত শিক্ষক ভরে আছে
কচিকাচা শিক্ষার্থীদের বানাচ্ছে অশিক্ষিত
সমস্যা কি সরকারি আমলা টাকা নিচ্ছে।


যে ঘরে আগে মাতাব্বর ছিলো বড় কর্তা
সে ঘরে আজ শাসন করছে কোমল গিন্নি
ঘরের কাজ করছে বেটা—নারীর মত করে
নারী বাহির ঘুরে, পুরুষের লাগাম পড়ে।


সমাজ এখন আধাশিক্ষিতদের হাতেই জব্ধ
মূর্খদের এলোমেলো কথায় গোটা সমাজ ধবংস
হয়ে যায়। সংসার ভেঙে যায়। মৃত্যু হয়।
প্রেম মরে ঝরে পরে মৃত্তিকায়; আলো নিবে যায়।
নিজেরাও মরে অন্যদেরকেও মারে—জিহাদ
পরিকল্পিত হামলা মস্তিষ্কের উপরে; গোলাবারুদ
ধবংস করে দেয় সত্য শিক্ষার সাদা নকশা,
নীলনকশা একে যায় আধাশিক্ষিত—মূর্খ।



যে সমজে আমি নষ্ট


যে সমাজে আমি নষ্ট হিসেবে বিবেচিত
সে সমাজে আমি শুধুই নষ্ট;
অহেতুক কারণেঃ
আমার চুল লম্বা, আমি কালো, গরীব, দুঃখী।
আমি নিষিদ্ধ কবি; সে সমাজে
যে সমাজে আমি শুধুই নষ্ট, আমাকে বিবেচনা
করে আমার শারিরীক গঠন; এলোমেলো চুল—
দিয়ে আর কিছুই নয় কিচ্ছু না।


সমাজ হয়তো আপনাকে মানুষ বানাবে
নয়তো মানুষের মুখোশ পড়াবে।
চুল, শারীরিক গঠন, সৌন্দর্যে বিবেচনা করিবে
দূর্বল দেখিয়া অপমানিত করিবে।
সুখে থাকিলে বার বার ছুটে আসে ঘরে
দুঃখের সময় ১০০ মাইল দূরেও দেখা যায়না।
অভাবের দিনে হাসিবে—
অভাব পুরালেই বুকে জড়াবে।
আমাদের সমাজ, আমার সমাজ!
চেনা বড় দায়; চেনা মুখ গুলোও অচেনা
বিপদে পড়লে বুঝা যায়।


যে সমাজে আমি নষ্ট হিসেবে বিবেচিত
সে সমাজে আমি শুধুই নষ্ট;
আমাকে দেখে হাসে, উপহাস করে
কারণঃ আমার চুল গুলো লম্বা, কোকড়ানো।



মিছিল-মিছিল খেলা


পোড়া লংকার মত ঝাজালো মিছিল-তো ছিলো
বাহান্ন, একাত্তর, মুজিবের ভাষণ;
মিছিল-তো ছিলো সত্যের মিছিল, জয়ের মিছিল,
বাংলার বাঙালির মিছিল, সংগ্রামের মিছিল।
আজ এ কেমন মিছিল?
হাঙ্গামা-দাঙ্গামা, রক্ত নিয়ে খেলা
আগুনের উত্তাপ, দলে-দলে সঙাত,
এ কেমন মিছিল?
স্বাধীন দেশে মিছিল-মিছিল খেলা।
সাধারণ মানুষের উপর হামলা—মামলা
বোমাবাজি, গাড়িতে আগুন, রাস্তা অবরোধ-হরতাল
মারামারি, এ কেমন মিছিল, যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলা?  
টিয়ারসেল, জলকামান, গুলির শব্দ!
চার দিকে হাহাকার, বাতাসে আগুন—
চিৎকারের শব্দ, আমার ভাই তোমার ভাই.....
টেলিভিশনে খবর দেখে মা কাঁদে
খোকা-খোকা বলে চিৎকার করে।
শাহবাগে তখনও এক ঝাক তরুণ সংগ্রামে!  
কিসের জন্য?
দেশ–তো কবেই স্বাধীন হয়ে আছে?
উড়ন্ত পাখির মত;
তবে কেনো আজ এত মিছিল?
ফিজ ঢালা কালো রাস্তায় রক্তমাখা দেহ গুলো
থেতলে রয়, কৃষ্ণচূড়ার পাপড়ির মত।
আজ আঠারোর এ কেমন মিছিল
দলে-দলে মিছিল, রক্তঝরা মিছিল?
ক্ষিপ্ত-রাঙা চোখের হাঙ্গামা মিছিল।


নষ্টরাও নষ্ট হবে


সাদা আলো, সাদা রঙ, সাদা আত্মা-মন
নষ্টদের হাতে সব অন্ধকার হবে কোনো এক দিন
কোনো এক দিন মানুষ—মানুষের মাংস খাবে
মানুষ—মানুষ নামেই থাকিবে অন্ধকার পৃথিবীতে
নষ্টদের কাছে ক্ষমতা হস্তক্ষেপ হবে,
উগ্র হবে ক্ষমতা, ক্ষমতার টানাটানি মৃত্যুতে।


কোনো এক দিন কারো চোখে ঘুম থাকিবে না,
চোখ উল্কাপিন্ডের মত মাটিতে ধ্বসে পড়বে,
ধবংস হবে সব সব, নষ্টদের শরীরও;
কালো আলো, কালো রঙ, কালো আত্মা—মন।
নষ্টদের চোখ লাল হয়ে থাকবে
দাঁতে রক্ত লেগে থাকবে—সাদা রক্ত, সাদা মাংস,
নক্ষত্রের মাঝে নষ্টদের চোখ পড়িবে,
ঘাসের মাঝে জিহ্বা ঘষিবে স্বাদ নিবে মৃতের।


ভাত থাকিবে না কোনো ঘরে, কৃষকের হবে মৃত্যু
রাখালের মুখ থেকে বাঁশি কেড়ে নিবে—
ভয়ংকর ভাবে বাঁশি বাজাবে নষ্টরা,
ব্লেকহলের মত হবে পৃথিবী,
পৃথিবী ঘুরিবে অন্ধকারে, নষ্টরাও নষ্ট হবে।
গ্রহ—উপগ্রহ কাঁপিবে, ধবংস হবে সৃষ্টির শুরুর মত
নষ্টেরা কালো থেকে কালো হবে—কৃষ্ণ কালো
সৃষ্টি সব স্রষ্টার কাছে চলে যাবে_
কালো আলো, কালো রঙ, কালো আত্মা—মন
সাদা আলো, সাদা রঙ, সাদা আত্মা—মন
সব শরীর, সব-সব মহা সৃষ্টি, স্রষ্টার কাছে যাবে।



তোমাদের শহরে


তোমাদের শহরে কামুড়ের দাগ গুলো কি ভাবে
উঠাবে? যেখানে শত শত নারীর শরীরে কামুড়।
মাটিতে, ক্ষেতে, ভাতে, সব খানে, শহর জুড়ে!
বিমর্ষ মুখ হা করে আছে বিশাক্ত দাঁত দেখিয়ে
এখনও নির্গত হয় বিষ! বিষ বাতাসে উড়ে_
বিকলাঙ্গ হয় প্রাণী, সব গুলো শরীর রক্ত ক্ষয়ে।
তোমাদের শহরে কামুড়ের দাগ গুলো স্পষ্ট
উনিশ শতকের দাগ গুলো এখনও মোছা যায়নি
নারীর শরীরে নির্যাতনের দাগ, কৃষকের শরীরে,
যোদ্ধার শরীরে, নেতাদের বিদ্রোহী বাণীতে।
এখনও কামুড়ের দাগ লেগে আছে—চোখে
মুখে, পেটে, স্তনে, মাটিতে, শ্রমিকের শরীরে।


তোমাদের শহরে কামুড়ের দাগ মুছা যায়না
পুরনো ক্ষ্যাপা টেনে টেনে নরপিশাচরা বিজ
রোপণ করে! অমানুষের। উনিশ শতকের
বিষ দাঁতের অমানুষ গুলো এখনও চোখ মেলে আছে_
হা করে থাকে মানুষ দেখে! গিলে গিলে খাবে?
হাড় চিবিয়ে রক্ত—মগজ, মাটি থেকে রস খাবে।
তোমাদের শহরে বিমর্ষ মুখে লালা এখনও ঝরে
লালায় রক্ত আর মগজ মিশ্রিত গন্ধ আসে
দূর থেকে বাতাসে ভেসে আসা গন্ধ নাকে লাগে
সব বিকলাঙ্গ, নারী, পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধ, কবরে।
মাংস পোড়ার গন্ধ আসে উনিশ শতকের
এখন মাংস পোড়ায়, কালো অন্ধকারে।


তোমাদের শহরে এখনও রক্ত চুষা রক্ত চুষে
কামুড়ের দাগ গুলো স্পষ্ট লেগে আছে শরীরে
নির্যাতিত মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ ঘুমে_
বিষের গন্ধে নিহত—আহত, চোখ নেই ঘরে।
মাটিতে কেউ, কেউ জ্যান্ত—মৃত, ক্ষত শরীরে
কামুড়ের দাগ লেগে আছে পেটে, স্তনে।
তোমাদের শহরে কামুড়ে দাগে রক্তের চাকা
জমে আছে নিঃশ্বাস, পোড়া মাংসের চক আঁকা
যেনো: বরবর গুহা বাসিন্দাদের চক্র
উনিশ শতকের বীজ এখনও গজায়।
মাটি থেকে রস কামড়ায়, শরীর থেকে রক্ত
মাংস, মগজ, কলিজা, হাড়, নারীর স্তন।



রক্তাক্ত মন


আহত পাখির মত, রক্তাক্ত শরীর
               বিহঙ্গ-বিরহ আঁধার।।
বক্ষ ছেঁদে, মিসাইলের মত হানাদার
আলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ-বিভীষিকার।।
আমি            স্তব্দ, বৃক্ষের মত
আমি            ধ্বংস, জালেম যত
আমি            শিশুদের কাছে, স্বপ্নের মত!
আমি            মানুষ, মানুষের চক্ষু জলে
                  বেদনার কাছে, আমিও কাঁদি।
আমি            রক্ত চাই না, মৃত্যু চাই না,
আমি            শান্তি চাই, জান্নাতের মত।


সিরিয়ার উড়ন্ত পক্ষি রক্তাক্ত-বিস্ফোরণে
নির্মম আঁধার রক্তাক্ত শরীর, ক্ষত-বিক্ষত
আধ মানবির আলামত, হিংস্র রূপ বর্ণিত।
ওরা             মানুষ নহে?
ওরা             জালেম, দুষ্কর
ওরা             বিবর্ধন হিটলার
ওরা             শিশুদের চোখে তাকায়না
                  মুখ, মস্তক, অঙ্গ অঙ্গ অনল
                  অমানবিক, কালো হাত-প্রলয়।
ওরা             মানুষ নহে,
ওরা             জালেম, পঙ্গপাল,ধ্বংসকারী,
                  মানুষ, মানুষের খতমকারী।
ওরা             মানুষ নহে
                  যারা জীবন নিয়ে করে হেলা
                  হাসতে-হাসতে শত-শত শরীর
                  পুড়িয়ে দেয়-এটম বিস্ফোরণে
ওরা             মানুষ নহে।


যুদ্ধ চার দিক যুদ্ধ, ভীতিপ্রদ মানুষ
টিএসসির রাস্তা রক্তাক্ত ফানুস
অন্ধকারে জলকামানের দানুস
রাবার বুলেট শরীরের মাংস কামড়ে_
বিষাক্ত করে দেওয়া লাঠির দিক্কার।
যুদ্ধ,-  ৫২,৭১, স্বাধীনতা
মুজিব হত্যা, রুহুল আমিন, ৩০লক্ষ শহিদ
পথে-পথে, মুখে-মুখে ডাসবিনের খাবার,
                           -এটা স্বাধীনতা?
যারা দেশের জন্য রক্ত দিয়েছে-প্রাণ
তারা             এখনও স্বাধীনতা খোঁজে
তারা             এখনও যুদ্ধ করে নিজের সাথে
তারা             এখনও চোষনদের কারাগারে বন্ধী–
                   মুখামুখি যুদ্ধ।
                   হাজার-হাজার রুহুল আমিনের
                   পরিবারের মত_
                   না খেয়ে আছে-মাটি কামড়ে।
ওরাই            যুদ্ধা, বীর যুদ্ধা
ওরাই            সংগ্রাম-সংগ্রামী
ওরাই            বাংলার, বাংলার, বাংলার
ওরাই            বীরশ্রেষ্ট, ৭১, স্বাধীনতার।


কান্না            আসেনা, শুঁকিয়ে মরুভূমি
কান্না            দেখেনা,-চক্ষুদ্বয়ে
কান্নার           রং ধূসর
                  চোখের ভিতরে চোখ
                  জলের ভিতরে জল
                  দেখতে হলে মানুষ হতে হবে
                  আলোর ভিতরে ঢুকতে হবে
                  স্বাধীনতা খুঁজে শত-শত বার
দালালের রঙ মাখানো শহরে নয়!
নিজেকে খোঁজতে হবে_
চাষার ক্ষেতে, রাখালী গানে
বৃদ্ধ বাবার চোখে, বিধ্বস্ত মনে
মায়ের বিসর্জিত স্বপ্ন, ঘুম ভাঙ্গা ধ্যানে।


স্বাধীনতা        উড়ে আকাশে-বাতাসে
স্বাধীনতা        আমার-তোমার চক্ষে-বক্ষে
স্বাধীনতা        হাতের মুঠোয়
স্বাধীনতা        মা-বাবার আশীর্বাদ
স্বাধীনতা        দুর্নীতি, জুলুম, ভুলে-ভালোবাসা।
আমি-আমার ভিতর স্বাধীন হতে চাই
বাংলা আমার, আমি বাংলার হতে চাই
স্বাধীন হতে চাই আমি ও বাংলা
বন্ধী কারাগার থেকে মুক্তি চাই
মুক্তি চাই, মুক্ত চাই, মুক্তি চাই-রক্তাক্ত মন থেকে।



আমি ছাত্র


আমি ছাত্র, আমি শান্ত
আমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে অশান্ত,
আমি পুষ্প, আমি কঠিন,
জুলুমের বিরূদ্ধে শিষ্ট,
বন্ধুর বুকে শ্রেষ্ঠ।
আমি রক্ত চাইনা, বিবাদ চাই না,
আমি চাই শান্তি, শৃংখল।
আমি দুর্বার, আমি বাংলার অহংকার
উসৃংখলা করে চুরমার।  
আমি ছাত্র, আমি নরম আন্দলন,
আমি বন্ধু হত্যার বিচার চাই।
আমার সাদা জামা কোন্ লাল করে দিল ওরা?
আমিতো ছাত্র ছিলাম
শুধু বন্ধু হত্যার বিচার চেয়ে
জোর গলায় বলেছি_
ভাইয়ের রক্ত বিদায় দিতে দেবনা,
তাতে কি আমার অপরাধ?


আমি ছাত্র, আমি প্রভাত ফেরি
আমি সূর্য–কিরণ, দুপুরের স্বচ্ছল ঘাম
আমি স্কুল, আমি ঘাস, মায়ের নিশ্বাস।
আমি শুধু স্কুল, কলেজ, ছাত্র নয়
আমি সারা বাংলাদেশ, আমার নেই ভয়।
আমি ছাত্র, আমি মায়ের দেখা স্বপ্ন
আমি আমার নয়, আমি বাংলার–মায়ের,
আমি বায়ান্নো, আমি একাত্তর, মুজিবের স্বপ্ন
আমি ২৫শে মার্চর নিরিহ মানুষের শপথ
আমি রেসকোর্স ময়দানের লক্ষ্য জনতার উত্তেজনা।
আমি ছাত্র, আমি আজ জেগে উঠেছি_
মৃত্যুর যন্ত্রনায়,
বন্ধুর রক্তাক্ত শরিরের শপথ নিয়ে বলছি,
বিচার নিয়ে মায়ের কোলে ফিরবো,
না হয় বাংলার বুকে নিজেকে বিলিয়ে দিব।


এই বাংলা কার


ভীবিষিকার সংঘর্ষে সংবিধানের পাতা
বিমর্ষ মুখের কামড়ে রক্ত ঝরে, পাতা পুড়ে
চিৎকার করে ডাকে বাংলার মানচিত্র, পতাকা।
হঠাৎ বাবা, মা আর বোন শিউরে উঠে
ভাইয়ের ক্ষতবিক্ষত লাশ দেখে
আবার করুণ চোখে দুখী ভাইয়ে কেঁদে উঠে
বোনের থেঁতলানো ধর্ষিতা শরীর দেখে।
শোন তোমরা এই বাংলা আমার না
চিৎকার করে বলছি শোন তোমরা
এই বাংল আমার না, আমার না
আমার বাংলা শেখ মুজিব, জিয়া
রফিক, জাব্বার, সালাম, ত্রিশ লক্ষশহীদ।


যে বাংলায় চিকিৎসার অভাবে মায়ের মৃত্যু হয়
যে বাংলায় স্ত্রীর সামনে স্বামীকে কুপিয়ে মারে
যে বাংলায় সন্তানের সামনে বাবাকে গুলী করে
যে বাংলায় ভাইকে হুমকি দেয় বোনকে ধর্ষণ করবে
যে বাংলায় মানুষ মানুষের মাংস কামড়ায়
যে বাংলায় মানুষের সামনে মানুষ মারে,
সবাই কানা, বোবা, কালা, বিকলাঙ্গ, পতিবন্ধী,
শোন তোমরা সে বাংলা আমার না, আমার না।
আমার বাংলা বাহান্ন, ঊনষাট, একাত্তর,
শেরে বাংলা, ভাসানী, ফজলুল হক, তাজউদ্দীন।


যে বাংলায় প্রভাতে পাখির গানে ঘুম ভাংতো
আজ আর প্রভাতে গান শুনি না, গানের বদলে
মানুষ কোপানের চিৎকার শুনি, শুনি আর্তনাদ
বেওয়ারিশ লাশের সংবাদ শুনি, শুনি দীর্ঘশ্বাস।
মানুষ কুকুর হয়ে উঠছে, কাকে কামড়াবে
যে কয়জন মানুষ আছে হুমড়ি দিয়ে কামড়ে খায়
মাংসের স্বাদে অমানুষ গুলো লালা ঝরাচ্ছে
এত স্বাদ এত স্বাদ শুধু মানুষের মাংস খাবে।
শোন তোমরা শোন বর্বর, তোমরা মানুষ নহে
তোমরা সবুজ শ্যামল বাংলা নহে, বাংলার নহে।



আমি আসিতেছি শহরে শহরে


আমি হাসিতেছি তোমাদের শহরে শহরে
তোমরা আমাকে শিখিয়েছিলে বিমর্ষ হাসি।
সূর্যের হাসি, ফুলের হাসি, আগুনের হাসি
আমি এক দিন হেসেছিলাম যুদ্ধের ময়দানে
সে থেকে আমি আজও হেসে যাই বিমর্ষ হাসি।
আমি তোমাদের শহরে হেঁটে হেঁটে যাই
আর যুদ্ধ শিখি, আলো আর আগুনের যুদ্ধ।
আমাকে দেখবে সবাই ভয়ংকর রূপে
আমি কখনও আমাকে দেখেনি আমার মত করে
আমি যে আজ তোমাদের মত, তোমাদের মত
তোমাদের শহরে বেড়ে উঠেছি কোন এক দিন
আজ আসি, যাই, যুদ্ধ শিখি, মরণ যুদ্ধ।


কোন্ এক দিন আমাকে দেখিবে আমি তলোয়ার হয়ে আছি
তোমাদের হাতে হাতে,_ আমাকে দেখিবে আমি যুদ্ধ
আছি তোমাদের শহরে শহরে,_ আমাকে দেখিবে আমি
সুখ আবার অসুখ হয়ে আছি তোমাদের শরীরে শরীরে।
কেউ কেউ আমাকে দেখিবে মহাপ্রলয় হয়ে
আসিতেছি তোমাদের শহরে শহরে—
কেউ কেউ দেখিবে আমি মহামারি, বন্যা, ঘূর্ণিঝড় হয়ে
সব কিছু ভাঙিতেছি শহরে শহরে—
কেউ কেউ আমাকে দেখিবে আমি মৃত্যু হয়ে
সব জানোয়ার মেরে পেলেছি শহরে শহরে।


আমি তোমাদের মাঝে বেড়ে উঠেছি কোন্ এক দিন
কোন্ এক দিন মানুষ ছিলাম মানুষের মত
আজ তোমাদের মত হয়ে উঠেছি, তাইতো তোমাদের
মৃত্যুর খবর দিচ্ছি,_ তোমাদের সবাইকে মারবো—
এই শপথ নিয়ে হাসছি তোমাদের মত,
তোমরা যখন নারীর শরীর খুবলে খুবলে খেয়ে হেসেছিলে
আজ আমিও হাসবো তোমাদের মেরে।
তোমাদের শরীর জ্বালাবো, পুড়াবো, গলাবো
টুকরোটুকরো করে আবার তোমাদের খাওয়বো
তোমরা যখন নারীর শরীরে আগুন দিয়েছিলে
একটুও বুক কাপেনি? আকাশ কেপেছিলো
তোমারা দেখনি, শোনোনি  নারীর চিৎকার।
আজ আমি এসেছি সব ধ্বংস করে দিতে-জানোয়ার।


মানুষ আর মানুষ রইল না


জিহ্বায় লেগে আছে রক্ত, পুঁজ আর মল
হিংস্র অমানুষ গুলো লালা ঝরাচ্ছে
পবিত্র মাটিতে আর পবিত্র আত্মায়,
মুখোশের ভিতর থেকে বিমর্ষ দাঁতে
মাংস আর পুঁজ খাবে_
দুর্নীতি আর ডাকাতি আর চুরি অমানুষদের হাতে।


নারীর শরীর নিয়ে ধর্ষকের টানাটানি
একটা ধর্ষকেরও ফাঁসি হয়নি
কেনো?
তারা কাদের হাতে হাত আর লিঙ্গ রেখেছে।


অসহায়ের ভাতে রক্ত, শরীরে রক্ত নেই
সব রক্ত চুষে আর মাংস খুবলে খুবলে খাবে শুকুনেরা
শুকুনেরা আর কুত্তা কেউ উপরে আর কেউ নিচে
রাজত্ব করছে সাধারণ মানুষের উপর।


ধর্মকে নষ্ট করছে এক দল ধর্ম ব্যবসায়ি
কত যে নারীর ইজ্জত লুট করেছে
পাঞ্জাবি টুপি পড়া মুখোশধারী শয়তান
ওরা ধর্ম বুঝেনা, শরীর আর তৃপ্তি বুঝে।


প্রকাশ্যে খুন, ধর্ষণ, লুট অহরহ ঘটছে
কেনো?
খবর দেখতে আর মন চায়না মৃত্যুর খবর
তারা কাদের হাতে হাত আর লিঙ্গ রেখেছে।


উন্নত হচ্ছে সব


আমি আর আমি যখন মানুষ তখন আমি মাটি;
আর যখন অমানুষ তখনও মানুষ—পশুর মত
জনগণ যখন গনতন্ত্র তখন সরকার—কে?
সরকারের তিনশত হাত সন্ত্রাসের সদস্য
তখন হাত গুলো মানচিত্র গিলে খাবে
এই শপথ করেই বড় হচ্ছে আবার মরে যাচ্ছে।
একটি আহত চোখ আর একটি নিহত চোখের
মধ্যে গনতন্ত্র যে ভাবে বেঁচে আছে; মধ্যাকর্ষণ।
আমলারা প্রকাশ্যে চুরি করে আর
চোররা গোপনে চুরি করে এখানেই প্রার্থক্য।


কয়েক বছর আগেও চেয়ারম্যান চুরি করতো
গরিবদের চাল, গম, আর এখনতো
পুরো গ্রাম আর মানুষ বিক্রি করে খায়, কারণ উন্নত হচ্ছে_
দেশ, উন্নত হচ্ছে মানুষ, উন্নত হচ্ছে সমাজ।
মূর্খরা যখন সমাজের মাতাব্বর
তখন শিক্ষিতরা বেকার, জুতা ক্ষয় করে।
প্রধান মন্ত্রী নির্দোষ কারণ মন্ত্রী সভা কামলাদের
হাতে জব্দ। সরকারের তিনশত হাত খাঁটি সোনা_
জ্বলেপুড়ে খাঁটি হয়ে এসেছে গদিতে।
সমাজের প্রশাসনিক কাজ গুলো যেনো খেলা
নিজেদের ইচ্ছেমত করে, সমাজের ঠুনকো নেতারা
জোরে চিল্লায় কারণ, খালি ঠোংগা শব্দ করে বেশি।
ওরা নাকি নেতা সব গুলা চোর ইতিহাস খুঁজে দেখলে।
দেশ উন্নত হচ্ছে, সমাজ উন্নত হচ্ছে, উন্নত হচ্ছে মানুষ
উন্নত হচ্ছে চুরি, উন্নত হচ্ছে ধর্ষণ, খুনখারাবি।


হে তারুণ্য


তুলো হুংকার, শির তুলে বল
যৌবন চেতিয়া ধর তলোয়ার
রুক্ষের শিরে ধর, হে বল_
            লও তলোয়ার।


আজ দেশে সব বিকলাঙ্গ
চোখে নেই হুংকার ,
তারুণ্য যৌবন উঠাও শির
             লও তলোয়ার।


দেশে আজ অনিয়ম-উশৃংখল
হে তারুণ্য তুলো হুংকার
ধর তলোয়ার  যৌবনের
ধর্ষকের শিরছেদ এক কোপে লও
রক্ত মাংস মৃত্তিকাতে পায়ে পিসে
জানোয়ার লয়ে তুলো হুংকার
                 লও তলোয়ার।


হে তারুণ্য যৌবন লয়ে
হও শক্ত—
মনে বল লয়ে, যুদ্ধ করো
অনিয়মের সাথে,
নির্যাতনের ঘাড়ে দেও লাথি
নেতা খেতা, সব তুচ্ছ পাতি
অত্যাচারীর মুখে দেও থুথু
রক্ত চুষার দাত তুলে নেও
হে তারুণ্য তুলো হুংকার
           লও তলোয়ার।



এক দিন পৃথিবী ঘুমিয়ে যাবে


আকাশের ওপারে সুখ-স্বর্গ!
এপারে দুঃখ-নরক?
আমি-আমার মত কত জন ভাবে!
এপাড়ে মেঘ জমে;
আকাশ থমকে-নীরবে,  
পাখিরা উড়ে ভয়ে-ভয়ে
রক্তাক্ত ডানা মেলেনা বাতাসে।
ঝরে পড়েছে পাতা, ঘাস, মৃত্যু
মাটি ধূসর হয়ে ফসল ছাই হয়ে গেছে!
মানুষ লাল চোখে সূর্যের মুখে চেয়ে আছে_  
অন্য নজরে ।  


উঁচু-উঁচু দালান নুয়ে আছে মানুষের মাথায়_
কালো চোখে;
কাক ডাকে শুঁকনো নারিকেল গাছে বসে
তপ্ত রোদের দহনে;
এখন আর চোখের জল আসে না_
নিজেই চুষে নিয়েছে সব
শুঁকিয়ে মরুভূমির প্রান্তর হয়ে আছে,  
ঘুম আসে না-ক্লান্তির আবছা তন্দ্রা।


এপাড়ে সুখ নেই—অসুখ!
দুরের ঘর গুলোতে কয়েকটি বাতি জ্বলে
শিশুদের খেলার শব্দ শুনা যায়,  
ওরা এখনও হাসে-সুখে,  
বৃষ্টির গায়ে হাত বুলিয়ে দেয়
চোখে-মুখে আদর মাখে;  
কোলে পুতুলের সাজ, লাল শাড়ীতে—
ওরা নিষ্পাপ বৃক্ষের মত।


এক দিন পৃথিবী ঘুমিয়ে যাবে
সে দিন অন্য পৃথিবীতে আমাদের বাস হবে
স্বর্গ-নরক দু'টি শহরে।
পৃথিবীর বুক ছিরে পাখিরা চলে যাবে
ওদের আর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না,  
ওরা নিরুদেশ হয়ে যাবে
ঘুমিয়ে যাবে চিরতরে।


এপাড়ে সুখ নেই, মানুষ বলে?
সুখ কেনাবেচার মানুষ গুলি দুঃখ বুঝে না,  
সহসায় দিন গুণে-গুণে সরল মানুষ সাদামাটা;
ওপারের সুখ অর্জনে কত মানুষ?
দুঃখের বসতে উড়ায় ফানুস।
ওপারের সুখ কত জনার লাগি?
এপারে সুখ-অসুখ সমসাময়িক
দিন শেষে কিছু নেই;
এক দিন আমি-আমরা ঘুমিয়ে যাব পৃথিবীর তরে
আর পৃথিবীর আলো চোখে আসিবেনা ফিরে।
এক দিন পৃথিবীও ঘুমিয়ে যাবে_
সব ধ্বংস করে;
সে দিন কিয়ামত হবে
ধংস লীলা-তামাম পৃথিবীর মরণ
সে দিন ঘুমিয়ে যাবে সবাই
সুখ-অসুখের মানুষ গুলি;
ফিরে যাবে অন্য পৃথিবীতে
স্বর্গ-নরক দু'টি শহরে।


পৃথিবী গোল্লা


তোমরা বুঝিবে যে দিন সে দিন তোমরা আর
মানুষ রবে না হয়ে যাবে আত্মা;
সে দিন চিৎকার করে কাঁদিবে শুধু কাঁদিবে
বলার মত কোনো ভাষা থাকিবে না।
পৃথিবীর বুকে কামড়েছিলে আর রক্ত চুষেছিলে
আর মাংস খেয়েছিলে;
তোমরা সেদিনও মানুষ ছিলে না, ছিলে অমানুষ
আর অমানুষ ছিলে।
কত ফুল তোমাদের তপ্ত নিঃশ্বাসে ঝরেছিলো
কত পাতা তোমাদের দাঁতে চিবেছিলে
তোমরা শুধু তোমাদের কথা ভেবেছিলে
পৃথিবীর মায়ায় পড়ে;
আর নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলে
কত দিন বেঁচেছিলে, বাঁচিয়ে রাখতে পারলে?
আজ নিজেকে চিনতে খুব কষ্ট হয় বুঝি?
তোমার জিহ্বায় আগুন আর পুঁজ লাগিবে।


অন্যের হক আর অন্যের ঘাম চুষেছিলে
মনে করেছিলে মধু, মধুর মতই চুষেছিলে।