একুশে যে প্রাণ ঝরিয়া পড়েছে মৃত্তিকার গহ্বরে
ঘন অন্ধকার বাঁশ ঝাড়ে, ঘাসের আবরণ শরীরে।
যে ফুল ঝরিয়া পড়েছে সকাল পেরিয়ে বিকেলে
সে ফুল আমার নয়ন কাঁদাইয়া জল ঝরে_
জাগিয়ে তুলে অন্ধকার রাতে সঙ্গহীন,
আবার ডাকে পেঁচা হয়ে, ঘরের পাশে কাঁঠাল গাছে,
ঘরের ছালে শুকনো ঢাল ভাঙিয়া পড়ে
ঘুম চোখ জাগিয়া উঠে, শরীরে কাঁপন ধরে।


কোন্ এক দিন ধানের আঁটি ঢালিয়াছিলো উঠুনে
সে ধান আজ সোনালী ধান খই ফুটে;
মুখে হাসি নেই আজ, চার দিকে অন্ধকার ঘাটে
জোনাক জ্বলে না, মৃত্যু কত ডাকে উঠুনে।
একুশে প্রাণ ঢলিয়া পড়েছে উঠুনের কোণে
হয়া না আর দেখা সূর্য উঠা কোন্ ভোরে।


ঘাসের আবরণে ঢাকা পড়েছে একুশের প্রাণ
কবরের উটেস্ত মাটি মিশে গেছে পুকুরে
কোন্ এক বৃষ্টির রাতে; অন্ধকার ঢেলেঢেলে,
সকালে ঘাস ফুল ফুটে আছে, নিঃশ্বাস মরে।


একুশে প্রাণ ঘুমিয়ে রয়েছে অদূরে, সবুজ বনে
‘সারা রাত জাগিয়ে তুলে, পেঁচা হয়ে ডাকে'
ছুঁয়ে দেইনি বলে আমার ঘুম চোখে দিন হয়ে আছে
খেলার আওয়াজ নিয়ে ঘরের পিছন থেকে ডাকে_
                            শুধু রাতেই ডাকে।


যে দিন ঘুড়ি উড়াতে উড়াতে দু'জন দৌড়ে ছিলাম
সবুজ মাঠে; পাংশু মেঘও উড়ে ছিলো নাটাই ছাড়া_
পাখিরাও উড়ে ছিলো, আজও উড়ে—ঘুরে,
আজ শুধু তুই নেই_নিঃশ্বাস নেই, দেহ নেই-অস্তিত্ব,
একুশে প্রাণ ঝরে আছে মৃত্তিকার গহ্বরে,
ফুল ঝরে; বৃষ্টি, পাতা, আলো নিবে আঁধারে।
আমায় সারা রাত জাগায় পেঁচা হয়ে, কাঁঠাল গাছে,
ঘরের ছালে শুকনো ঢাল ভেঙ্গে পড়ে
একুশে বন্ধুর প্রাণ ঝরিয়া পড়েছে মৃত্তিকার গহ্বরে
নিসর্গের বুকে নিজেকে বিলিয়ে মিলিয়ে—কবরে।



বন্ধু ফারুকের জন্য মন কাঁদে।
বন্ধু ফারুককে উৎসর্গ করালাম।