একটা সময় ছিল-
যখন সব কিছুতেই মুগ্ধ হতাম।
ডানামেলা গাংচিলে মুগ্ধ হতাম,
মুগ্ধ হ্তাম শ্রাবনের ধারা দেখে।
ঘন বরষায়, টিনের চালার ভেতরে
দু’কান দু’হাত দিয়ে চেপে ধরলে-
যে ঐন্দ্রজালিক শব্দ হয়,
তা ছিল প্রিয় আমার।
আরো মুগ্ধ হতাম, যখন দেখতাম,
বাঁশের ছিপ দিয়ে-
হরিপদের পঁচা ডোবা থেকে
কেউ লুকিয়ে মাছ চুরি করছে।
মুগ্ধ হতাম ট্রাক ড্রাইভার
ওসমান মিয়াকে দেখে-
যে কিনা মুখে একটি সুগন্ধি পান পুরে
দু’টাকার সিগারেট ফুঁকে চলে
রাজকীয় ভঙ্গিমায়।
ভাবতাম, আহা! আমিও যদি
ওসমান মিয়া হতে পারতাম।
সাহিত্যের শিক্ষক রমেশ চন্দ্র ছিলেন
আমার ছেলেবেলার নায়ক।
তাঁর শব্দচয়ন আর কবিতার দ্যোতনা
দু’টোই ছিল সমার্থক।
বুকের ভেতরে দ্রিম দ্রিম করত
তার একেকটি বাক্য।
দীর্ঘ দিবস, দীর্ঘ রজনী
আবিষ্ট ছিলাম তাঁর উচ্চারণ সম্মোহনে।
বন্ধুরা যখন আকাশ কাঁপিয়ে
স্লোগান তুলতো,
মনে হত, ‘শ্রেনী বৈষম্যের পতন’
সেতো আমার হাতেই ভবিতব্য।
আরও কত কিছুতেই না মুগ্ধ হতাম।
কখনো শেষের কবিতার অমিত,
বা কখনো অঞ্জনের কাঞ্চনজঙ্ঘা।
কিংবা, কিংবা কখনো হুমায়ুনের হিমুতে।
আজ আমার সেই মুগ্ধতা
কোথায় উবে গেল কর্পূরের মত?
কোন কিছুতেই আজ আর মুগ্ধতা নেই।
না অমিত, না গাংচিল না ওসমান মিয়া।
মৃত্যু হয়েছে বুকের গহীনে আগলে রাখা-
আমার একান্ত প্রিয় মুগ্ধতার।


রাত ১১ টা
জানুয়ারি ২৮, ২০১৭
সিলেট।