অপরিচতা,


অপরিচিতা কেমন আছো তুমি?জানো তোমায় আজ খুব মনে পড়ছে। কেন এত মনে পড়ে তোমায়? জীবন টা জানো মরুভূমির মত প্রাণ হীন লাগছে। নেই কোন সজিবতা,চঞ্চলতা যৌবনের উচ্ছলতা।যেনবালি রাশির মত ধূধূ প্রান্তর হয়ে গেছে।তুমি পাশে নেই বলেই তো নেই শীতল পাখার হাওয়া,গ্রীল ধরে থাকার প্রতীক্ষা,আদর মাখা চাদর।সেই শুটকি মাছের ভর্তা,চেলা মাছ দিয়ে বেগুনের চটচটি।তোমার হাতের পায়েস মাঝেমধ্যে খুব মিস করি।গরম ভাত রেধে দিতে আর আমি কিনা জোড় করে পান্তা খেতাম,তুমি রাগ করতে, আর রাগের মাথায় শুকনা মরিচ কাঁচা পেঁয়াজ এনে দিতে আর আমি সরিষার তৈল চেয়ে নিতাম।তুমি করুণ  চোখে চেয়ে থাকতে,রান্না করা ইলিশ মাছের বাটি হাতে নিয়ে।কি অদ্ভুত ছিল তোমার আমার চাওয়া পাওয়া।বাড়ির পাশে বেল গাছের নিচে।  জোৎস্না  রাতে দাঁড়িয়ে থাকতাম এক সাথে। কত গল্প করতাম দুই জনে,কখনো  তুমি, কখনো  আমি, অভিমান করে দুইজন দুই দিকে তাকিয়ে থাকতাম।এখন বুঝি ভালবাসা না থাকলে, অভিমান করা যায় না।সেই অভিমান ভাঙতাম তোমার ঠোঁটে আলতো ছোঁয়া দিয়ে,আর তুমি  আলিঙ্গনে শাড়ির আঁচল তলে টেনে নিতে আমায়।লাল, নীল বাঁতির লাভায় সেই কেরোসিন এর জ্বলন্ত বাতি ভূলতে পারি না এখনো।চার দেওয়ালে বন্দী  জীবন,এখন নেই সেই সুবিশাল মাঠ,যেখানে দাঁড়ালে হিমেল হাওয়ায় তোমার চুল আমার মুখে এসে লাগতো, আর শাঁড়ির আঁচল,আমার মাথার উপরে উড়তো।কলা গাছের ভেলায় উঠে বাড়ির পাশের বিলে বর্ষা কালে, শাপলা ফুল ছিঁড়ে এনে দিদাম। মাঝেমধ্যে  তুমি বায়না ধরতে উঠার জন্য,একদিন তো পড়ে গিয়ে ঢেড় পানি খেয়েছিলে,আমারো একটু ইচ্ছা ছিল অবশ্য যাতে ভেলায় না উঠতে চাও আর। খুব মিস করছি খুব তোমায়,এখন আর বুঝি বাঁতি হাতে নিয়ে পথ চেয়ে দাঁড়িয়ে  থাকো না তাই না? থেকো না খবর দ্বার নইলে দূর থেকে অভিমান করবো।তা ছাড়া কি বা করার আছে আমার বল?অনেক অনেক ঋণ নিয়ে, কত দেনা পাওনার হিসাব কষে,এখানে আছি চষে।তুমি ছাড়া ভালো নেই আমি সেটাই জেনো একটু হলেও সুখ পাবে,কি করি কি খায়,বলতে চাই না। নির্ঘুম নিশি কাটিয়ে শুধু শুধু বালিশ ভিজাবে আবার, ঘরের ফুটো টা দিয়ে জ্যোৎস্না রাতের তাঁরা দেখো,আমায় দেখতে পাবে, চৌনেত্র যেন সেথায় মিলিত হয়, প্রতিনিয়ত।
ভাল থেকো, নিজের প্রতি খেয়াল রেখো।