এ জীবন ব্ড়ই নিষ্ঠুর  
মায়া মমতাহীন, এক নিঠুর সত্য  
এখানে পথ খুব শ্বাপদসংকুল,
এখানে পথ চলতে গেলে লড়াই করতে হয়
কখনো নিজের সঙ্গে , কখনো অন্যের সঙ্গে  
কখন বা হারাতে হয় আপন মনুষত্ব ।
কিন্তু সে পথে চলতে গিয়ে,
       যখন বার বার হোঁচট খাচ্ছিলাম,  
বার বার এদিক ওদিক তাকাচ্ছিলাম, একটু সুখের আশায়
পড়ে গিয়ে যখন আর উঠতে পারছিলাম না,
তখন যে হাতটা বাড়িয়ে দিল  
সে ঐশী ।


সেখান থেকে আমাকে টেনে তুলল
তাই একটা ধন্যবাদ তার প্রাপ্য ছিল ।
কিন্তু আমি তখন নির্বাক
আমি শুধুই তাকিয়ে ছিলাম তার দিকে,
মুখটা যেন খুব চেনা, কিন্তু কোথায় দেখেছি তা
মনে করতে পারছি না ।
সে আমাকে নিয়ে পথ চলছিল
কিন্তু আমি নির্বাক
আমি তখন ও শুধুই দেখছি ।
যতোই দেখছি, ততই বেশি দেখতে ইচ্ছে করছিল
কিন্তু আমি তার সম্বন্ধে কিছুই জানতাম না ।
যদিও পরে জেনেছিলাম
সে ঐশী ।


সে যে আমাকে কতটা সাহায্য করেছে,
            কিভাবে সাহায্য করেছে,
তা হয়ত সে নিজেও জানে না ।
আমাকে উৎসাহ দেওয়ার  কোন দরকার ই পরত না তার ।
তাই হয়ত সে ভাবত, এ বাপারে তার কোন কৃতিত্ব নেই  
কিন্তু প্রকৃতপক্ষে, সে নিজেই তো
ছিল আমার উৎসাহ, আমার উদ্দীপনা ।
কিন্তু সে নিজেও তা জানত না
তার মায়াবি চোখের অবলা চাহনি,
আমাকে বাঁচার খোরাক যোগাত
সে চোখের কোণে এক ফোঁটা অশ্রু,
বা সে সরল মুখে একটু দুঃখের ছায়া
আমাকে হিংস্র করে দিত ।
তার আবদার মাখা মধুর স্বর,
আমাকে বাধ্য করত জয় লাভ করতে ,
তা যে বিষয়েই হোক না কেন ।  
আবার আর গোলাপি ঠোঁটের কোণে,
যখন একটু মৃদু হাসি দেখা যেত
সেটাই হত আমার জয়ের আনন্দ,  
সবচেয়ে বড় পুরষ্কার ।
আমি শুধু চেয়ে থাকতাম
ঠোঁটের নিচে একটা কালো তিল,    
খোলা চুল আর নিষ্পাপ, ধবধবে এক চেহারা
সে ঐশী ।


সে হয়ত বা কিছু বলতে চাইত, কিছু ভাবত
কিন্তু কখনো শোনা হয় নি যে
     তা আসলে কি ছিল!!!
আমিও বা কতটুকুই বলতে পারতাম ?
মাঝে মাঝে ভাবতাম, ও পা মেলে বসবে
আর আমি ওর কোলে শুয়ে থাকব
আর শুধুই ওকে দেখব ।
ভাবতাম ; আর কল্পনার জগতে হারিয়ে যেতাম
প্রকৃতপক্ষে, এর সীমাও ছিল ঐ কল্পনা পর্যন্তই
কেননা কখনই তো তা প্রকাশ করা হয় নি ।
তবুও তাকে নিয়ে ভাবতাম, শুধুই ভাবতাম
কারন? সে ঐশী ।


তাকে অবশ্য কয়েকবার কিছু ইঙ্গিত দিয়েছিলাম
সে হয়ত বোঝে নি ।
একদিন সে চুল বেধে রেখেছিল
যদিও সে সব অবস্থাতেই সুন্দর, তাকে খোলা চুলেই  
আমার বেশি ভাল লাগত ।
সাহস করে ওকে না বলে,
হঠাৎ আমি ওর চুলটা খুলে দিই
ও হেসে আমার দিকে তাকাল  
তারপর চুল বেঁধে ফেলল ।
কারণ হিসেবে জানাল যে ওর গরম লাগছিল
কিন্তু আমি হঠাৎ থমকে যাই
চোখ দুটোকে সেদিন কেমন যেন অন্য রকম লেগেছিল
আসলে; সে তো এমন ই,
সে ঐশী ।


কিন্তু আজ হঠাৎ হোঁচট খেয়ে পড়ে  আমি আঁতকে উঠি ।  
পড়ে যাবার জন্য না, সেই হাতটাকে না পেয়ে ।
ভালভাবে দেখলাম, আমি আবার সেই পথে  একদম একা ।
চারিদিকে শুধুই ধ্বংসযজ্ঞ ।
তবে কি এতক্ষণ স্বপ্ন দেখছিলাম ?
এবার আমি ইচ্ছে করেই হোঁচট খাচ্ছি ,
হয়ত তা দেখে সে আবার আসবে,
আমার বিশ্বাস, সে আসবে
কারন? সে ঐশী ।