সে কবিতা ভালবাসতো-
বর্ষার প্রথম জলে ভাসিয়ে দিত
কাব্য, ছেড়া পাতার কাগুজে নৌকায়;
আমার আঙ্গিনায় বাজতো তার ছন্দ
রিম ঝিম বৃষ্টিতে নূপুরের ধ্বনি,
আর, আমি ভাবতাম- সে অন্য কেউ।


লাল কৃষ্ণচূড়ারা সেদিন এসেছিল
দল বেঁধে, বৃষ্টি ভেজা বাতাসে ভেসে,
সাদা শাড়ি, মাথায় হলদে ফুলের মালা;
কদম ফুলের সুবাস মাখা চিরকুট
যেন- সাজানো ফুলদানিতে কারুকাজ;
সেই সুনিপুণ হাতের উষ্ণতায়-
বাষ্পীভূত জলের মত উড়ে গেল
মোমবাতি; অন্ধকারে অচেনা দুটি চোখ,
মায়াবী সে আলোতে- ছিল অন্য কেউ!


আজ, শত ছিন্ন-মলিন এই পৃথিবী
নর্দমার প্যাঁচ প্যাঁচে কাদায় মশার লার্ভা,
বেসিনের পানিতে ভেসে যাওয়া দামী
প্রসাধনী- চেটেপুটে খায় শুককীট;
গুসি, গিভেনসির দ্যুতিতে অন্ধ শহরের
পথে সাজানো মানুষ- সব প্রাণ হীন!
বর্ষার কবিতায় ছিল- অন্য কেউ।


তার খোঁজে, খোঁজে ফিরি- বর্ষা দিন
নিয়ন আলোর ভীড়ে; তারা ভরা আকাশ
যেন, মৃত্যুর মিছিলে নিঃশেষিত পথিক
বহু ক্রুশ ঘুরে শ্রান্ত, পথের শেষে
পলিশ করা শহরের- সভ্যতার দেয়াল!