বিয়ের দিনটা আসলে মা যে কষ্টগুলো ভুলে,
টুকটুকে লাল শাড়ি পরে বাক্সখানা খুলে।
শাড়ী আছে কয়েকটা বেশ তারপরেও মায়,
লাল শাড়িটাই পরে কেন মন জানতে চায়।


বাবা আমার দূর্ঘটনায় হারিয়ে দুটি পা,
সেই থেকে আর কোনদিনও বাইরে যেত না।
পরের বাড়ি কাজ করে মা বেতন যত পায়,
বাবার ওষুধ কিনতে প্রায় সবই চলে যায়।


বাকিটুকু যায় যে চলে সংসারেরই কাজে,
বিলাসিতা সেই কারণে মায়ের কি আর সাজে?
সাত সকালে যায় বেরিয়ে ফেরে সন্ধ্যা বেলা,
তারপরেও মুখখানাতে থাকে হাসির মেলা।


মাছ, মাংস খাই যে কবে তাও পড়ে না মনে,
সেদ্ধ ভাতে দিন চলে যায় খোঁজ নেয় ক'জনে।
ভাইটা আমার ছোট্ট যে তাই মাছ খেতে চায় রোজ,
চোখের জলের সান্ত্বনা নেই, নেয় না কেহ খোঁজ।


ভ্যান চালিয়ে আমার বাবা আনত টাকা যা,
সংসারটা চলত তাতেই কষ্ট হতো না।
এমনি তাদের বিয়ের দিনে আনতে গিয়ে শাড়ী,
ফেরার পথে বাবার পায়ে উঠল বড় গাড়ি।


দূর্ঘটনায় বাবা আমার হারিয়ে দুটি পা,
পাথর হয়ে ঘরে থাকে কেউ তো দেখে না।
সেই কারণেই মা যে আমার বিয়ের দিনটা এলে,
লাল শাড়িটাই পরে শুধু অন্য শাড়ি ফেলে।


সংসারেতে অভাব লেগে কষ্টে থেকেও তবু,
অন্য কারো কাছে মা যে হাত পাতে না কভু।
স্কুলে রোজ যাওয়ার পথে দুই টাকা দেয় মা,
জমিয়ে রেখে বেশ হয়েছে মা তা জানে না।


সেই টাকাটা দিয়ে আজই বাজার থেকে আমি,
লাল টুকটুক কিনেছি শাড়ী নয়ত বেশি দামি।
বিয়ের দিনে মায়ের হাতে শাড়ি দিলাম তুলে,
জড়িয়ে ধরে চোখ ভাসালো কষ্ট সকল ভুলে।