ভুলে গেছি গ্রামের ছবি,
ভুলেছি মাটির ঘ্রাণ।
ভুলে গেছি কিভাবে কৃষক কিষানী
নবান্নের উত্সবে মেতে উঠে-
হাওয়ায় হাওয়ায় গায় ধান শালিকের গান ।


ভুলেছি পৌষের শীত,
হাঁড় কাঁপানো মাঘের কনকনে হাওয়া।
ভুলে গেছি ধানের শীষে
বাতাস নেচে যাওয়ার আনন্দ,
ভুলেছি আমার কাছে
স্বদেশের সব চাওয়া পাওয়া ।


ভুলে গেছি ছয় ঋতুর রং কিংবা
মাছরাঙার গলায় আঁকা আল্পনা,
শীতের পিঠার স্বাদ ভুলে গেছি;
পুলি, ভাঁপা আর পাটিসাপটারা
আজ কতো অচেনা!


ভুলে গেছি ডাহুকের ডাক,
বুক জলে ডুবে শাপলা শালুক খোঁজা।
মধ্য রাতে গলা ছেড়ে ঘরে ফেরার
গান ভুলে গেছি,
ভুলে গেছি বসন্ত বাতাসে বেনী খুলে দিয়ে
কী বোঝাতে চেয়েছিল নির্বাক আফরোজা ।


দুরন্ত শৈশব ভুলে গেছি,
ভুলে গেছি ভরদুপুরে দলবেঁধে লিচু চুরির আনন্দ।
মায়ের মুখ থেকে টকটকে লাল পান নিয়ে
খাওয়ার মজাটুকু ভুলে গেছি,
ভুলে গেছি ভাওয়াইয়া আর ভাটিয়ালীর মন মনোরম ছন্দ।


গগন ভাংগা বরষায় কাদা-জলে মেতে
খেলার আনন্দ ভুলে গেছি,
ভুলেছি শীতার্ত দুপুরে খড়ের ওপর শুয়ে
রৌদ্রের মজা।
দিঘীর জলে পাল্লা দিয়ে  চোখ লাল করা
ভুলে গেছি,
কী অদ্ভূত জীবন, সব প্রিয়দের ভুলে থাকা কি সহজ, কতো সোজা !


রচনাকাল:
প্যারিস ,
১২ মার্চ ২০০৮