তুমি কি চিনতে পেরেছ নিজে'কে ?
যেমনি করে জননী'র কোল চিনো,আহ কত আহল্লাদের জায়গা,
যে ধুলায় তোমার প্রথম গড়াগড়ি,ভুমিষ্ট হওয়ার পর কাঁদছনা দেখে,
তোমার পা' দু'খানি উপরে তুলে তোমাকে  মাটি প্রণাম করিয়েছিলেন
গ্রামের ঐ বৃদ্ধা ধাত্রী-'ছেলে হয়েছে গো ছেলে হয়েছে'
মা প্রসব বেদনা কাটিয়ে মিষ্টি কষ্টে হেসেছিলেন ঠোঁটের আড়ালে তোমাকে
কোলে পেয়ে,তুমি ভাসিয়ে দিলে মায়ের কোল,প্রথম লোনাজল ছেড়ে-
যেই গ্রামে তোমার দুরন্তপনা ,ছুটাছুটি  শৈশব,কৈশোরে অন্যের
আম গাছে লাঠি মারা,চুরি করা ডাব নারিকেলের জলে বুক ভাসানো
ধরা পরে বাবা'র কঠিন শাসনে আঁখি'তে জোয়ার আনলে।
পড়া'র টেবিলে মাষ্টারে'র শাসনে'র বেত ভেঙ্গে যে দিন তাঁর চশমার আয়না
খুলে ফেলে দেওয়ার মত দুঃসাহসিক কাজ আজো কি নাড়া দেয় না?
এক বার পানিতে সাঁতার কাটতে গিয়ে যখন পানিতে ডুবতে বসেছিলে,
গ্রামবাসী'দের চেষ্টা'য় সে যাত্রা বেঁচে গেলে ।
কিন্তু আবার যখন তুমি ভীষন অসুখে ভুগছিলে তোমার বাবা পয়সার অভাবে
তোমার চিকিত্সা করতে পারছিলেন না গ্রামবাসীরা চাঁদা তুলে তোমায়
শহরে নিয়ে গিয়ে সুস্থ করে তোলেন ।
কিন্তু তখন ও তুমি নিজেকে চিনতে পারো নি।
এক রাত্রি'তে যখন তোমায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না ,
তখন তুমি পাশের গ্রামে যাত্রা পালা দেখছিলে।
কিন্তু সেই দিন বাবা'র চোখ রাঙ্গানো বিচারে,অভিমানে নিজে'কে
আড়াল করে চলে গেলে অজানা গন্তব্যে ।
সেই শোকে জননী দেহ টা যেন শেষ করে দিলেন বক্ষ ভাসিয়ে এক সন্ধ্যায়
অসীম পোড়া জ্বরে,গ্রামে কোন  ভালো ডাক্তার এর অভাবে ।
স্ত্রী,পুত্র শোকে বাবা ও এক দিন হাঁটলেন না ফেরার দেশে।
অথচ আজ তুমি ঐ শহরে'র নামকরা বড় ডাক্তার হয়েছো,অধিক টাকা'র লোভে
ধনী'র দুলালী কে বিয়ে করেছো ।
সরকার তোমায় গ্রামে বদলী'র ব্যাবস্থা করেছিলেন,তুমি ঘুষ দিয়ে গ্রাম কে
'নোংরা গ্রাম'বলে আখ্যায়িত করে সেই পদে বহাল রইলে ।
জানি না তুমি কোন মাটি'তে তৈরি ?
এখন ও চিনতে পারলে না নিজে'কে ? একবার ও ভাবলে না ,
কি পেলে? আর কি দিলে তুমি এই সমাজ সংসার কে ?


রচনাকাল
১২।০৭।২০১৪
ইউ এ ই ।