আহা বৃষ্টি!
তোমাদের ঘুম ভাঙা প্রভাতের জানালায়
একটানা ঝরে পড়া ছন্দে জাগায় মুর্ছনা মধুর গীতি;
আর আমাদের জানালায়
চমকে ওঠার মতন কিছু প্রশ্নের সমাগমে জাগায় ভীতি;
অফিসের ঘড়ির কাঁটায় পৌঁছাতে পারবো কি?
ছাতা নিয়ে নামবো যে রাস্তায়, নেই রিকশা, হাঁটতে হবে,
তুমুল এ বৃষ্টি আমাকে ভিজিয়ে একসা করা থেকে মার্জনা করবে কি?
অথবা বজ্রপাত! ওগুলো যদি মানিকের গল্পের মতো
কটাক্ষ করে শেষ করে দেয় জীবনের সব গতি আর বিধি আর অসঙ্গতি?
রাস্তার ওপর সৃষ্টি হয় বয়ে যায় ছোট খাটো বন্যা,
তার ওপর দিয়ে ধনবানের বন্য গাড়ি কাদা-জল ময়লা ছিটিয়ে
তোমাদের এই বৃষ্টি মধুর আকুল দিনে_ আমার দিনটি মাটি করবে কি?
চামড়ার জুতো না হয় নষ্ট হলো সামান্য বেতনের এই অফিস কর্মচারীর,
তবে বাস পাবো কি? আসবে তো, আমাদের একটু জায়গা দেবে তো?
তোমাদের মধুর উপচানো বৃষ্টির মতন মনুষ্য উপচানো বাসগুলো
আমাদের দারুন অবজ্ঞা হেনে চলে যাবে না তো?
পাঁচ পাঁচটি দিনের বাসের ভাড়া গুনে আজ
এই মধুর বৃষ্টির দিনে আমাকে নিতে হবে হয়তো সিএনজি...
নাহলে উপস্থিতির খাতায় পড়বে অনুপস্থিতির নির্মম লাল দাগ,
কেটে নেবে অনুভূতিহীন এ বৃষ্টি ঝরা অতি সুন্দর দিনটির বেতন?
যদিও জানি বহুদিন গরমে দহনের পর ঝরছে আজ স্নিগ্ধ বরিষণ,
দেহ ও মন জুড়িয়ে সেই স্নিগ্ধতায়
ইলিশের ভাজা আর বেগুনের ভর্তা দিয়ে খিচুড়ি খাবে যখন,
পৃথিবীর অনেক কিছুর মতোই খুব বৈষম্যবাদী, এক চোখা,
তোমাদের প্রভাতে চিত্ত চঞ্চল করে দেয়া অপূর্ব প্রশান্তির এই বৃষ্টি তখন।


(২১.০৫.২০২২)