আমি তো কখনো বলিনি;
দ্রোহকাব্য কথনে জ্বালিয়ে দেইনি,
ঐ বাতাস বাড়িটির অশুভ সব দৌরাত্মের কাহিনী;


বলিনি কখনো,
ঐ বাতাস বাড়িটির হিংস্র সজারুটির কথা;
গ্রেনেড মেরে ধ্বংস করে দিতে চেয়েছিল যে,
ফেরেশতার মতো এক পিতার রেখে যাওয়া বাগানের ফুলকন্যা;


কখনো বলা হয়নি আমার;
যখন এ দেশ ছিল আলো ভক্ষণকারীদের জমানা;
আলো উৎপন্ন করার অজুহাতে, তাদের অর্থ লোপাটের অবিনাশী ক্ষুধায়,
                           পুরো জন্মভূমি বিজলীবিভ্রাটে থাকতো অন্ধকার;


বিদ্রোহে কাটিনি তো সে ছড়া;
প্রতিটি নাগরিকের বাণিজ্য আকাঙ্খা,
অনুমোদিত হতো না, বাতাস বাড়ীতে গুরুদক্ষিণা দেয়া ছাড়া;


আমি তো চয়ন করিনি সে গাঁথা;
যৌক্তিক হরতাল বিদ্রোহকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে,
ফাঁকা রাজপথে রাজপুত্রের ক্রিকেট খেলার ঔদ্ধত্যপূর্ণ তামাসার কথা;


আমার তো বলতে লজ্জা করে;
দেশের রাজরাণী ছিল সে! অথচ ঘুম থেকে জাগতো যে মধ্য দুপুরে!,
আর ওদিকে রাজপুত্র, বেয়াদপী স্পর্ধায় আত্মত্যাগী প্রাজ্ঞ সব মন্ত্রীরে,
কথায় কথায় উঠ-বস করাতো, বাতাস বাড়ি থেকে প্রচন্ড সব ধমক মেরে;  


আমি তো কখনো বলিনি;
রাজপুত্রের এক চেলা বন্ধুর বিকট হাম্বা নিনাদী বাহিনী,
দেশ জুড়ে খাম্বা পুঁতে, জনতার পয়সা লুটে, ধনবান হবার সে শঠতার কাহিনী;


আমি তো কখনো বলিনি কাব্যে;
বিনা খরচে সমুদ্রতলদেশে, অন্তর্জাল সংযোগের দুর্দান্ত সুযোগটিকে,
মূর্খের মতো অবজ্ঞা করার স্তম্ভিতকর বোকামিটিকে;


আমি তো কখনো বলিনি,
সেই মর্মভেদী ইতিহাস;
রাণী আর রাজপুত্রের দোসর,
পাকি জানোয়ারদের বংশধর, ধর্মান্ধ কুলাঙ্গার রাজাকার, নারকীয় জন্তুরা,
পেট্রোল বোমা দিয়ে শত শত নিরপরাধ মানুষ পুড়িয়ে মারার অবিশ্বাস্য গুনাহকর্ম;
মরু আফিমের নেশাতে নেশাতুর কতগুলো দোযখের দানবেরা,
কায়েদা আল এর মতো ধর্মান্ধকাল আনার জন্য,
                          সারা দেশব্যাপী ফাটিয়েছিল একাধারে বোমার পর বোমা!


আর আহা! সে কি বিষাদময়!
আমার শুদ্ধ বাঙালি রমণী, যারা আমাদের মা ও বোন হয়,
পুষ্পশোভিত, লাল হলুদ মেহেদী রঙা তাঁতের শাড়ি,
অপরূপ সেই বৈশাখী বাঙালি অমিয় সৌন্দর্যকে,
রক্ত বন্যায় ভাসিয়েছিল, ধর্মান্ধ মরু তাবেদার পশুকুলে, রমনার বটমূলে;


আর আশ্চর্য!
আজও পাকিকুফরির মতো বহু ধর্মান্ধ মরুভুমির দাসেরা বলে,
রবি ঠাকুরের আমার সোনার বাংলা জাতীয় সঙ্গীতটি, মূলত নাকি, নৈবেদ্য দেবীকে!!
গানটির প্রথম কলিটিই তো ”আমার সোনার বাংলা...”
সেখানে হঠাৎ করে কেনো আসবে দেবী মা!?
মরু বালুতে মগজ ধোলাইকৃত মগজ, কখনো বুঝবে না, বুঝবে না এসব দেশদ্রোহী হায়েনারা!
এসব অ-বাঙালি শিক্ষার দুর্মুখেরা ইতিহাস মানতে চায় না,
রবি ঠাকুরের পরিবার পালন করতেন ব্রাহ্ম ধর্ম এবং আমরা দেশকে বলি
মাতৃভূমি মানে ”মা”, যেমন তাদের দেশকে বলে পিতা-পিতৃভূমি জার্মানরা;


আমি তো বলিনি সে কষ্টের কথা;
দেশের জনকের কিংবদন্তী ইতিহাস,
বইয়ের পাতা হতে মুছে ফেলার বেঈমানী প্রয়াস,
আর যে মরু দস্যুরা জনকেরে করেছিলো অপমান,  
তাদেরই রাজপ্রাসাদে বারবার আতিথ্য গ্রহনের বিশ্বাসঘাতকতা;


খুন ধর্ষণ লুটতরাজ রাহাজানি!
ঐ বাতাস বাড়িটির জমানায় কিছুই কি হয়নি!?
আমি তো কখনো বলিনি, কিন্তু বিদ্রোহী! তোমরা কেন বলোনা?!;

ঐ বাতাস বাড়িটির কাহিনী, আমি কখনো লিখিনি,
এত বিরামহীন বিদ্রোহ তোমার, কেনো তবে লিখছো না তুমি!!?


আমি তো কখনো বলিনি, তবে তুমিও বলেছো কি একটিবার,
বাতাস বাড়িটির অন্যায় দুরাচার, হে বিদ্রোহী কবি আমার!


সেটাই তো মূল প্রতিপাদ্য বিষয়;
এভাবেই গণতন্ত্র প্রবাহিত হয়;
আধেকের স্বার্থ, আধেকের ভয়;
আধেকের প্রিয়, আধেকের নয়;
সেটাই তো কঠিন সত্য,
দুরাচারী বাতাস বাড়িটির কথা, তোমাদের কলমে বন্ধ হয়,
জানো বিদ্রোহী?
কোনো রাজ্যেই, জনতারা কখনো নিরপেক্ষ কবি ও প্রজা নয়।


(২৪.১০.২০২০)