ভেসে যাচ্ছে চরাচর চাঁদের আলোয়;
গাছেদের পাতাগুলো চিক চিক করছে যেন জ্যোৎস্নায় স্নানরত;
যেমন স্নানরত আমিও, অফুরন্ত সময় যে আমার হাতে,
আমি বেকার;


বন্ধুরা সব ব্যস্ত জীবন চক্রে, আর আমি বেকার বলে,
প্রতিদিন অবলোকন পরেও এই জ্যোৎস্নার দৃশ্যাবলী
নতুন করেই ধরা দেয় রোজ আমার চোখে;


কোথাও বেজে চলেছে হিন্দি গান;
একটুও মানানসই নয় এসব উৎকট সুর, পরিবেশটির পরিপ্রেক্ষিতে;
আমি উপেক্ষা করি সুর, ভাবি একটি শীতল পাটির কথা,
কোথায় পাওয়া যাবে? বিছিয়ে নিতাম ছাদের ঠিক মাঝখানে,
সরাসরি চাঁদের নীচে, ঘুম ঘুম চোখের পাতা
ছুঁয়ে যাবে গ্রীষ্মের মৃদুমন্দ হাওয়া,_ আর ভেবে যাবো কবিতা;


একটু আগে একটি মেয়ে, মায়ের পিছু পিছু মাথা নত করে
সলজ্জ ভঙ্গিতে হেঁটে গেলো; একবার ইচ্ছে হলো শুধাই,
"তোমার নাম কি? তুমি কি বসবে আমার পাশে,_ কিছুক্ষণ?
এই পাগল করা জ্যোৎস্নার আলোতে!
যাও তোমার মা'কে বলে আসো,_ তুমি যাও মা, আমি আসছি;
একটু বসে গল্প করি এই কবি'র সাথে";


সুমধুর চিন্তার ঘোরটি, ছিন্ন হলো অজানা এক অস্থির ব্যথায়;
আমি বেকার, অফুরন্ত সময় অশান্ত হবার;
আতংকিত হতে পারি অতি সহজেই, সামান্য দৈহিক পীড়ায়
আমি অপচয় করে দিতে পারি অযথা অস্বস্তিকর বহু ক্ষণ;


জ্যোৎস্না জিতে গেছে; চারিদিকে ইলেকট্রিক আলো হেরে ম্লান,
জ্যোৎস্নার আলো আর তার সাথী শত তারাদের কাছে;
ঘরের ভেতর এসে যেন ঝাঁপ দিলাম অগ্নিকুন্ডে!
তবে এখনই আমি ফিরে যাবো ঐ চাঁদের কাছে;
এসেছি শুধু এই অনুভবগুলো লিখে রাখতে ডায়েরীতে,
নতুবা ভুলে যাবো; হারিয়ে ফেলবো একটি কবিতার ইন্দ্রমণি;


আমি বেকার,
অনেক কথা, অনেক কবিতার দ্বার আমাকে খুলতে হবে,
লিখতে হবে, ভাবতে হবে, জীবনটি বন্দী হলো কখন কিভাবে?
অনুভুতি অনুভবেরা সব ভিড় করে থাকে,
                   আমার বেকার ভুবনের জ্যোৎস্না'র চারপাশে।


(২০.০৪.১৯৯৭)