শহর জুড়ে
নেমে এসেছে রাস্তায় শত শত হকার
বিস্ময়কর এক সংবাদ নিয়ে
দ্রুত ছাপা হয়েছে পত্রিকার অতিরিক্ত সংস্করণ
হকারের হাতে ধরা খবরের কাগজগুলোতে
এখনো লেগে আছে ছাপাখানার উষ্ণতা


শত শত হকারের সম্মিলিত চিৎকারে
ভেঙ্গে চুরমার আমাদের নগরের স্তব্ধতা


“জরুরী খবর...তাজা খবর...
সুখবর... সুখবর...
নগরবাসী, পড়ে দেখুন... পড়ে দেখুন
বেরিয়ে আসুন, নিয়ে নিন আপনার কপি...


পড়ে দেখুন... করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কার
নগরবাসি জেগে উঠুন... আবিষ্কার... আবিষ্কার
করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কার...”


ভৌতিক নিস্তব্ধতার মাঝে নিমজ্জিত শহরের
বাড়ীগুলোতে বন্দি যারা বহুদিন
তাদের অসাঢ় মগজে ধীরে ধীরে হলো রেজিস্টার
“কি যেন হচ্ছে বাইরে, দেখোতো জানালা খুলে...”


একটা জানালা খুলতেই, আরেকটা, তারপর আরেকটা
সারা শহর জুড়ে জানালা খোলার শব্দ আর উল্লাসী চিৎকার
“সবাই টিভিটা খুলুন, এখনি টিভিটা খুলুন...”


টিভিতে WHO এর প্রধান কর্তা বলছেন, “…..with tremendous relief and joy, we inform the people around the world, our Scientists and Doctors have found a cure for Corona, as we speak samples are being sent to the nations to eradicate the devastating virus……”


বেঠোফেনের সিম্ফনির নীচু লয় থেকে
ধীরে তার সপ্তকে ওঠার মতো
শহরের লক্ষ লক্ষ স্মার্ট ফোনগুলো
একটা দুটো তিনটে করে বেজে উঠতে উঠতে
বাজতে লাগলো শহরের সব মোবাইল ঐকতানে
ভরে গেলো হাজারো রিংটোনে ইথার থেকে ইথার
কোটি কোটি উল্লসিত পোস্টে ফেসবুক ওয়েব ওভারলোড


বিবশ রক্তে যেন হঠাৎ তড়িত বিদ্যুত প্রবাহ
সাড়া জেগে উঠলো সমস্ত অস্তিত্বে


ছেলে ছুটলো বাবার দিকে, “বাবা! বাবা! করোনার ঔষধ পাওয়া গেছে...
মা! মা!...হ্যা শুনলামতো বউমার কাছে...কি যে ভালো খবর...
...ঈশ্বর ওনাদের মঙ্গল করুন...
মামুণি, আবার আমরা পিৎজা খেতে যাবো, পার্কে যাবো...
সত্যি বলছো তো...আমি কিন্তু আইসক্রিমও খাবো, আর মানা নেই তো...
এই! তুমি আসছো কখন...প্লিজ, দেরি কোরো না...
দোস্ত! আয় আয়, এখুনি বেরিয়ে পর, এখুনি, অন্যদের বল...
এই ব্যাটারা নমস্য, এদের নোবেল ঠেকায় কে...কি যে খুশি লাগছে, মুক্তি! মুক্তি!...”



(রচনা: ১৩.০৪.২০২০)