বাংলার পাশে এসে দাঁড়ালো যে বন্ধু;
আর কেউ এসে দাঁড়ালো না সেদিনের অধীন বাতাসে;
ঐ বন্ধুটি শুধু এসেছিল,
মুক্ত করেছিল যৌথ সমর ঐক্যে, বাংলাদেশের সবুজ আর লাল;
মাত্র তেরো দিনে,
হানাদার হায়েনার নখ দন্ত ভেঙ্গে চুরে দিয়ে
ছিন্ন করে দিয়েছিলো, অশ্লীল অসভ্য দাসত্ব জাল;
জানোয়ারদের বিতাড়ন ত্বরান্বিত করে সে বন্ধু,
দূরীভূত করেছিল অবিলম্বে বাংলাদেশে অমানিশার কাল;


তাকে যদি বলি বন্ধু কৃতজ্ঞতা,
যদি বলি বন্ধু তোমায় ভালোবাসা,
তখনই ফুঁসে ওঠে নব্য রাজাকার, ধর্মান্ধ দেশদ্রোহী পশু,
দেশপ্রেমিকেরা সব হয়ে পড়ি "দালাল";


যে পরম বিদূষী বন্ধু,
চুলে অপূর্ব পক্ক প্রবাহে আর মুখশ্রী সৌন্দর্য্যে, ধীমান শক্তিতে ছিল জগদ্ববিখ্যাত;
বাংলার বাঘ সৌন্দর্য্য শেখ মুজিবের মতো;
ঘুরে ঘুরে বিশ্ব দরবার দ্বারে দ্বারে হয়রান হয়ে ছিল,
এই সবুজ বাংলার বাঙালির স্বাধীনতার জন্য ;
শেষ পর্যন্ত তাকে সবাই বিমুখ কোরে কোরে,
করে তুলেছিল বাংলার একক বন্ধু বীর প্রতিবেশী রণসঙ্গিনী;
তুলে নিয়েছিলো সে তাঁর জন্মভুমির মাটির বুকে,
লক্ষ লক্ষ শরণার্থী আর মুক্তিযোদ্ধাকে;
পার করেছিলো নয়টি মাসে একসাথে স্বাধীনতা অর্জনের অসহ যুদ্ধকাল;


তাকে যদি বলি হে বন্ধু, তোমায় আমৃত্যু ধন্যবাদ!
তখনই তীব্র শব্দহিসে ওঠায় ফণা, পাকি হানাদারের পুনঃউত্থিত বেজন্ম দালাল;


অকৃতজ্ঞ এসব নব্য রাজাকার আর ধর্মান্ধ পশু,
চাপাতে চায় আবহমান শুদ্ধ বাঙালি সংষ্কৃতির 'পরে - মরু জিঞ্জীর;
বাংলার নুনভাত খেয়ে দেয়ে, রচে চলে অবিরত - দেশদ্রোহী শব্দ শরীর।    


(২১.১২.২০২০)


(মহীয়সী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী, মহান শেখ মুজিবের, বাংলাদেশের পরম বন্ধু। আমার হৃদয়ের নায়িকা, প্রেমিকা, যে প্রেম আমি বিধৃত করেছি আমার কবিতাতে, "৩রা ডিসেম্বর ও ইন্দিরা"। আমার জন্ম দিবস সেই ৩রা ডিসেম্বর, সেদিন তিনি পাঠিয়েছিলেন প্রভাতে, বােমারু বিমান বাংলার আকাশে, যুক্ত হলেন বন্ধুটি, মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে মুক্তির রণাঙ্গনে। অপূর্ব আকাশের উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে যেখানেই আছো, হে বন্ধু কৃতজ্ঞতা, হে বন্ধু আমৃত্যু ধন্যবাদ।)


(শত সহস্র লক্ষ কোটি অনন্ত অগুণিত বিদ্রোহ শব্দ শরীর লেখা হোক, শাসকের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে! তবে সে বিদ্রোহ লিখনে বাংলাদেশের স্বাধীনতার মতো অমিয় প্রাপ্তিকে কালিমা লেপন "কি লাভ হলো দেশের স্বাধীনতা পেয়ে" - এই নিকৃষ্ট অনুভব, এই হীন প্রশ্নের তীর ছোঁড়া সঠিক নয়! শুধুমাত্র বাঙালির নিজের একটি স্বদেশ পৃথিবীতে, এই প্রাপ্তি ঐশ্বর্যের কোনো তুলনা নেই! "স্বাধীনতা মানে" "স্বাধীনতার উদ্দেশ্য ও কারণ" শুধুমাত্র একটি - বিজাতীয় হানাদার অধীনতা, দাসত্ব থেকে বাঙালি মুক্তি অর্জন করে, বাঙালির জন্য পৃথিবীতে স্বাধীন একটি রাষ্ট্র গঠন করা। ব্যস! আর কোনো দ্বিতীয় কারণ বা উদ্দেশ্য নেই, নেই, নেই! দেশের শাসনের অসন্তোষে, যারা স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশের মানচিত্র, পতাকা আর স্বাধীনতাকে অসম্মান, অশ্রদ্ধা, ভুলুন্ঠিত করে, বলতে চায় - "স্বাধীন হয়ে কি লাভ হলো", যার একমাত্র অর্থ দাড়ায় - "হানাদার দাসত্ব অধীনতা শ্রেয় ছিল" এবং যারা "সহমত পোষণ" করে - তাদের জন্য আমার করুণা এবং নীরবতা। সবাই নিজস্ব মূল্যবোধ নীতি বজায় রাখুন। দুই তরীতে অবস্থান বাঞ্ছনীয় নয়। ধন্যবাদ।)