ধর্ম! ধর্ম! ধর্ম!
অ স্বরবর্ণ! নাচে আমার স্কন্ধে
ফাটায় ধ্বণি অস্তিত্বে, মর্মন্তুদ
অধর্ম! অধর্ম! অধর্ম!


ধরমদেব নাম রেখেছিলো জন্মদাতাদাত্রী
বোধবুদ্ধি জাগার পর দেখলেন ইতিহাস
পৃথিবীর ভুতল জুড়ে পোড়া গন্ধ ধর্মের নামে যুদ্ধের
নির্বিকারে নাম থেকে ধরম অংশটুকু ছেটে
দেব আনন্দ হয়ে ভাসালেন সুখের জীবন পর্দায়


যুগে যুগে ধর্ম তরবারি শাণিয়ে
লক্ষ কোটি প্রাণ নির্বিকারে ঝরিয়ে
শ্মশাণ কবর গ্রেভইয়ার্ডের বিস্তীর্ণ ভূমির ওপর
তোমার আমার ধর্ম সদর্পে আছে দাড়িয়ে


মনুষ্য ইতিহাসের শুরু থেকেই ধর্ম
অসভ্য নারকীয় অস্ত্র তত্ত্বে জাগিয়েছে এক লহুর সাগর
পাঁচ হাজার বছরের বহমান এই কুটিল স্রোতে
আমরা ডুবে গেছি বহু আগেই, কেউ তা বোঝো না
আরো চাই, আরো চাই রক্ত, রক্তপিপাসা, ধর্ম মৌলবাদের মেটে না


ঐ মরুর বালুচরে কেনো গেঁথে রাখা তলোয়ার
ঐ সবুজ দ্বীপখন্ডে কেনো জেগে থাকে ক্রস
কাকে শাষায় উদ্ধত চিহ্নগুলো, যার ছায়াতলে
দুনিয়ার মিক প্রজাতি, নির্ভেজাল ভীরু স্রষ্টার আসল বান্দা
দরজা জানালা বন্ধ করে ভয় আর ত্রাসে কাঁপে
একবার দাড়ি কামায়, আরেকবার দাড়ি রাখে
ওদিকে অট্টহাস্যে, অশ্লীল সব ভোজে,
ধর্মধ্বজারা জিহ্বা চালায় মুরগির ঠ্যাংএ
অন্যদিকে ধর্মভীরু মাঠেঝোঁপে ওলকচু খোঁজে


ধর্মের নসিহত করো তোমরা!
যেনো তোমার ধর্মই সর্বশ্রেষ্ঠ
সাম্য, সহিষ্ণুতা যেনো তোমারটাতে ছাড়া আরো কারোতে নেই
চোখেও পড়ে না ঔদ্ধত্য, চুয়ে চুয়ে পড়ে বিষের মতো
করোটি হতে নিচের প্রতিশোধী প্রত্যঙ্গে
কাকড়াবিছে পৃথিবীতে ধর্মের বিষফোঁড়া ফোটার বিরতি নেই


সব ধর্মের যুধিষ্ঠিরে প্রশ্ন করি
কোথায় আবেদনপত্র দাখিল করে, হয়েছো স্রষ্টার ম্যানেজার?
ধর্মের ধ্বজা উড়িয়ে, লক্ষ ধর্মভীরু প্রাণ বুঝিয়ে
তোমরা এতো কেনো শত শত অবতার, দুষিত রক্তবীজের ঝার?
আমিরের পিকে পিকে, জেনে রাখো তুমি
স্রষ্টার সৃষ্ট ধর্মের দুনিয়াতে দরকার নেই তাঁর কোনো ম্যানেজার


সব ধর্মের সুর বলে চলে, আমরা সব ধর্ম ভাই ভাই
আমার চেয়ে সাম্যতার রাহু আর কোনো ধর্মে নাই
কিন্তু পান থেকে খসলেই চূণ, তলোয়ার ত্রিশূল উচিয়ে
গর্দানে কোপ দিতে কোনো দ্বিধা নেই


অভিযুক্ত আদম হাওয়া বিতাড়িত শাস্তির পৃথিবীতে, আশ্চর্য কি!
উজবুক তালগোল কুধর্মেরই তো হবে বাস
ধর্ম উম্মত্ততার লহু সাগরে, রুদ্ধ করে প্রকৃত ধর্মের শ্বাস
যুগের পর যুগ শুধু বয়ে চলেছে
স্রষ্টার দেয়া সফেদ ধর্মের, কলঙ্কিত ভারশানের দুর্গন্ধ কুবাতাস।


স্রষ্টার সব শ্রেষ্ঠ মানবদের আসা হয়েছে শেষ
দুনিয়াতে বহু বহু কাল আগেই
দিয়ে গেছেন তাঁরা পথনিদের্শক সব পবিত্র গ্রন্থ
সবাই সবারটা নিভৃতে পড়ো
নিভৃতে মাথা নত করো, নিজ ঘরে, স্রষ্টার তরে
চিৎকার করে ধর্ম বাঁচাবার জন্য তোমার তলোয়ারের প্রয়োজন নেই
ধর্মের নামে অন্যের প্রাণ কেড়ে নেয়ার তোমার অধিকার নেই
আছে রোজ কেয়ামত, জাজমেন্ট ডে
স্রষ্টাই দেখবেন কাকে কিভাবে শাস্তি দিতে হবে
উম্মাদের মতো নিজেকে, স্রষ্টার দূতের কাতারে হাসিল ভেবে
এইসব ভুল আলামত, খাসলত বাদ দাও সবে।


জেনে রাখো অন্ধকুলিন ধর্মাবতার, তুমি নিছকই মানুষ, আর কিছুই না
প্রকৃত ধর্মের সৌন্দর্যে,
যীশুকে ক্রুশে চরিয়ে সম্রাট, অনুতাপে পরে ভ্যাটিকান গড়েছে
দুর্ধর্ষ উমর তলোয়ার ফেলে দিয়ে মুহম্মাদ (সাঃ) এর কাছে এসেছে
মহামানবেরা কখনো বাধ্য করেনি, প্রকৃত কোমল ধর্মের আলো, তাদের ধর্মপ্রেমী করেছে।


(৩০.০৫.২০২০)