তার মুখশ্রী দেখে আজকাল কেউ ভাবে না,
এই লোকটি কবিতা লেখে;
তার রূপোলি চুল দাড়ি, কবিদের মতো হয়ে ওঠে না উজ্জল, চিত্তহরণকারী,
যে রূপের সন্নিকটে হয় সতত চঞ্চল, আমাদের চিরকালীন নদী ও নারী;
এখন তারা নিষ্প্রভা পরাজিত প্রান্তিক নৃপতিদের মতো -
অলক্ষ্যণীয়, শীর্ণ রুপোল,
যারা অব্যক্ত এবং নিস্তরঙ্গ বসে থাকে এককোনে,
                       আমাদের নগর ও গ্রামসমূহের অন্তরঙ্গ চন্দ্রিমা হাটে;


হয়তো আজো সে বসে আছে বলে - পতিত এক সিংহাসনে;
তাকায় কোনো কোনো রমণী তাদের দুখী দু’নয়নে,
আর ফিস ফিস করে বলে, ঐ লোকটি কবিতা লেখে;
তবে তার মুখশ্রী থেকে,
হারিয়ে গেছে কবিত্বের যত সুন্দর আলো, যেন কোনো দৈব দুর্বিপাকে;
এই লোকটির কবিতা পড়ে আর হাসে না লাজরাঙা কোনো নারী,
লাস্য মাখিয়ে কোনো বনলতার পুষ্পে রাখে না তাদের গভীর চুম্বন,
অথবা তাদের হৃদয়বিদারী গুঞ্জরণ - বেদনার্ত করে না কোনো রাতের পরী;
চুপিসারে উষ্ণ হয়ে ওঠে না কোনো অতৃপ্ত রমণী চিরকালিন পুঁথিবন্দী শাসনের অন্ধকারে;


এখন সবাই শুধু মৃদুস্বরে উচ্চারণ করে;
ঐ লোকটি যেন হঠাৎ মৃত্যুকে মেখে নিয়েছে মুখে,
ভাগ্যকে সঁপে দিয়েছে বিষাক্ত কোনো শ্বাপদ খোড়লে;
কবিতার খাতায় বিশ্বাসঘাতক সব চিত্র মায়ায়
                                লোকটি নিপাট শুয়ে থাকে;
তার মুখের বলিরেখায় সান্ধ্য পাখিরা ডেকে যায় বিদায়ের ক্ষণ,
আর মুখশ্রীতে তার খেলা করে দুর্নিবার পদ্মার অনন্ত ভাঙ্গন।


(২২.১১.২০২০)