আমি জানতাম তুমি একদিন আমার বন্ধু হবে;
কবিতা হবে; সুগন্ধী হবে হৃদয়ের ঘনীভূত মেঘে,
অথবা রাতের পাখি, খুঁটবে আকুল
শত প্রহরের দুঃখ জমাট এ বৃক্ষের মতো বুকে;


তাই হয়তো তোমাকে থামিয়েছিলাম সেদিন,
সেই পাঁচটি বছর আগে;
অনুরাগের মতন হয়ে ওঠা নির্জন সে বিকেলের সিঁড়িতে,
তুমি ছিলে খুব নিবেদিতপ্রাণ এক বাংলার শিক্ষিকা,
আজো মনে পড়ে কী অপূর্ব বুনোটে কত শৈল্পিক ছিল তোমার খোঁপা;
আর মনে পড়ে, প্রাঞ্জল চঞ্চল ঐ দুটো চোখ,
কত হৃদয়ের উঠোন ভাসিয়ে দিতো মেঘ-বৃষ্টি-প্লাবন,
অথচ কখনো তুমি তাকাও না; তবু কখনো তোমাকে নিষ্ঠুর মনে হতো না,
শুধু মনে হতো, একদিন আমার বন্ধু হবে যথার্থ এই বাঙালি ললনা;


ইংরেজী লিখতে লিখতে
কত যে উড়ে যেতো এ হৃদয় হতে
সফেদ কবুতরের মতো ডানা ঝাপটে ঐশ্বর্য মুখরিত আমার বাংলার কবিতা;
তাই এসে এ লোকালয়ে
মনে হলো তোমাকে কবিতা না শোনালে
তোমার কন্ঠ থেকে যদি না শুনি গোছানো আর প্রমিত শব্দমুখর প্রশংসা,
সেই অনুমোদনটি ছাড়া
আমার যে কখনো কবি হওয়া হবে না;


পাঁচ বছর পরে আজ হাঁটছি, নিবিড় চোখে খুঁজছি,
আলাপনে দুটো নদীর চন্দ্রালোকিত জোয়ার কাছাকাছি আনছি,
আর ধীরে ধীরে রাখছি
আমার এ হাত, তোমার ঋদ্ধ মনের ঐ অনন্য দেয়ালে;


এই তো যে কোনোদিন তুমি হয়ে উঠবে আমার পূর্ণ বন্ধু,
আমাদের প্রতিটি কবিতাময় শহর-সন্ধ্যার
                  মহা নিয়তির মতাে কোনো এক খেয়ালে ।


(১১.০৪.২০২২)