(মূল রচনাঃ Hotel California
by The Eagles - Don Henley, Glenn Frey & Don Felder)


আঁধার মরুভুমির মহাসড়কের ’পরে
শীতল বায়ুর প্রবাহ আমার চুল জুড়ে;
কলিটাস বৃক্ষের উষ্ণ গন্ধ
বাতাসের মধ্য দিয়ে উঠছে উর্ধ্বে;
দেখলাম সম্মুখে অদূরে, ঝলমলে আলোক দ্যুতি,
শ্রান্তিতে আমার দৃষ্টি অপ্রখর, মাথাটা ভারি,
বিশ্রামের জন্য বাধ্য হলাম, থেমে যেতে আজ রাত্রি;  


রমণীটি দাঁড়িয়ে ছিলো দ্বারপথে,
শুনলাম মিশন গীর্জা ঘন্টা বাজছে;
আপন মনেই ভাবছিলাম,
এটা হয় স্বর্গ অথবা এসেছি নরকে;
রমণী একটি মোমবাতি জ্বেলে
নিয়ে চললো আমায় পথ দেখিয়ে,
শুনতে পেলাম অনেক কন্ঠস্বর করিডোরে,
মনে হলো তারা যেনো বলছে;


ওয়েলকাম টু দা হোটেল ক্যালিফোর্ণিয়া!
কি যে অপূর্ব সুন্দর এ জায়গা!
এ স্থানটির কোনো তুলনা হয় না!
হোটেল ক্যালিফোর্ণিয়ায় আছে প্রচুর ঘর!
পাবে তুমি এলেই, যে কেনো সময়, সারা বছর;


মেয়েটির মন টিফানির মোড়কের মতো পাঁকানো,
তার আছে মার্সিডিস এর মতো বাঁক, মন মাতানো,
মেয়েটির চারপাশে প্রচুর সুন্দর সুন্দর ছেলে,
যাদের সে ডাকে, বন্ধু বলে;
কি নাচ তারা কোর্টইয়ার্ডে নাচে, গ্রীষ্মের মিষ্টি ঘাম ঝরে;
কেউ নাচে কিছু ফিরে পেতে, কেউ নাচে কিছু ভুলে যেতে;


অতএব ডেকে আনলাম ক্যাপ্টেনকে,
'এবার আনুন আমার পানীয় দয়া করে'
তিনি বললেন, ‘১৯৬৯ থেকে, সে পানীয় নেই আমাদের কাছে’
এবং কন্ঠস্বরগুলো, এখনো বহুদূর থেকে ডেকে চলছে,
জাগিয়ে দেবে মধ্যরাতে, তোমাকে শুধু শোনাতে, তারা বলছে;


ওয়েলকাম টু দা হোটেল ক্যালিফোর্ণিয়া!
কি যে অপূর্ব সুন্দর এ জায়গা!
এ স্থানটির কোনো তুলনা হয় না!
হোটেল ক্যালিফোর্ণিয়ায়, তারা জীবন উপভোগে পূর্ণ মত্ত!
কি সুন্দর এ আশ্চর্য!, এনো তোমারও অজুহাতপত্র;


সিলিং জুড়ে আয়না, গোলাপী শ্যাম্পেন বরফে;
রমণীটি বললো,
‘আমরা এখানে সবাই বন্দী, আমাদেরই অভিলাষে’
মনিবের কক্ষে, সবাই মিলিত হলো ভোজনপর্বে,
তাদের ইস্পাত ছুরিগুলো দিয়ে ছুরিকাঘাত করে,
কোনক্রমেই তবু তারা মেরে ফেলতে পারে না পশুটিকে;


সর্বশেষ যা স্মরণে আসে,
আমি প্রাণান্ত দৌড়োচ্ছিলাম দরজার দিকে;
আমাকে সেই গমন পথটি খুঁজে পেতে হবে,
যে পথে আমি ফিরে যেতে পারবো, আমার পূর্বেকার সেই জীবনে;


‘শান্ত হোন’ বললো রাত্রিকালীন দায়িত্বে থাকা লোকটি,
“আমাদের কার্যক্রম অনুযায়ী, আমরা শুধুমাত্র অথিতি গ্রহন করি,
চেকআউট সম্পন্ন করে নিতে পারেন,
আপনার ইচ্ছানুযায়ী, যে কোনো সময়ে,


তবে কখনোই!, চলে যেতে পারবেন না আপনি, এ জায়গাটি ছেড়ে”।


(০৮.১০.২০২০)


(* কবি সীমন্ত মৈত্র (নীল দহন) কে উৎসর্গ। তার কাব্য প্রতিভার, কাব্য চর্চার, তার পাঠ-জ্ঞানের দুর্দান্ত আশ্চর্যকর পরিধি বিস্মিত রাখে আমাকে সদা। আমার মতোই সে পশ্চিমা সঙ্গীতের দারুন ভক্ত, আবার তার গীটার ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্রের জ্ঞানও আমায় খুব প্রীত করে। যেন এপার আর ওপারে আমরা একই ভুবনে বেড়ে উঠেছি! তার সাথে পরিচয়ের পর, অনেক অভিমান-আঘাত-সান্তনায় বন্ধুত্বের শুরু থেকেই সময় কাটছে দারুন, কবিতার আসরে! তবে পরিশেষে বলবো, আমার আরো কবি বন্ধুদের মতো সে, “He is a better man than I”। কলকাতায় উপস্থিত হলেই, আমি সুনীল-শক্তিদের ভুবন দেখবো তাকে নিয়ে। প্রিয় বন্ধু কবি, আপনাকে আমার আন্তরিক ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা।)

(*বিলাস বৈভবে উন্নত বিশ্বের চাকচিক্যময় শহর জীবন! মাত্রাহীন আনন্দ-উপভোগে শহরে ধৃত এবং আজীবন বন্দিত্ব-বাস! প্রতিটি স্তবক এক একটি সিনেম্যাটিক খন্ড দৃশ্য, সেভাবেই পাঠ করতে হবে! জগদ্ববিখ্যাতের পর্বত চূড়ায় অবস্থিত, এই গানের অসম্ভব জনপ্রিয়তা! সবাই জানে এ গানটি, গীটার শিখলেই, গীটারবাদনের প্রথমদিকেই, বাদকের কাছে গানটি হয় প্রথম একটি পছন্দ, গাইবার জন্য! এবার কিন্তু আক্ষরিক হলেও, তারপরও একটু অন্যধারায় অনুবাদ করেছি।)


কলিটাস বৃক্ষ > মরুভূমির গাছ
হোটেল ক্যালিফোর্ণিয়া > এল. এ. হলিউড, ক্যালিফোর্ণিয়া শহর
টিফানি > বিখ্যাত অলঙ্কারের চেইনশপ
মার্সিডিস/মার্সিডিজ > মার্সিডিস গাড়ি
alibis > অপরাধ সংঘঠিত হবার কালে সম্পর্কিত ব্যক্তির অনত্র উপস্থিতির প্রমাণ দাখিল। কিন্তু এখানে শিল্পী, এ বিলাস জীবন উপভোগে যে দ্বিধা, তার অজুহাত হিসাবে মূল রচনায় বলছেন - bring your alibis > তাই আমি লিখলাম অজুহাতপত্র।
পশুটিকে > বিলাস জীবনের অভিলাষী পশুপ্রকৃতি মানবাত্মা
চেকআউট > হোটেল থেকে প্রস্থানপর্ব নিয়মাদি।