"জুলিয়েটনামা ৩১"


জুলিয়েট তুমি কেনো আমার বেদনাগুলোর একটি হলে?
কেনাে সুখগুলোর একটি হলে না তুমি?
নাকি এটাই ছিল কোনো অদৃশ্য থেকে,_ নিয়ম আমার জন্য?
এক জীবনে মানুষের উপহাস, অপমান, অহেতুক অবজ্ঞা,
পেয়ে যাওয়াও কি যুক্তিগ্রাহ্য নিয়ম বলে গণ্য?
জানি সারা জীবন কেটে যাবে তৃষ্ণার্ত, কেউ থাকবে না পাশে;
তোমার মতো কেউ মেটাবে না আজন্ম তৃষ্ণা আমার,_ অক্লেশে;
কাটবে না কখনোই এই ঘোর অমানিশা;
আমার জন্য নিমিত্ত নিয়মের যে কুয়াশা,
সে আড়ালে বসে, "কে যেন খেলে যাবে শুধু পাশা!"


(০৩.০৯.১৯৯৮)


---------------------------------------------------------------


"জুলিয়েটনামা ৩২"


(১)


আজ দিনটি ছিলো ব্যস্ততায় ঢাকা;
সব কিছু শান্ত হবার পর, অপরাধী এই কন্ঠস্বর
নিমজ্জিত হয়ে বিষণ্ন নক্ষত্রদের মিছিলে,
শুধোতে চাইলো, "জুলিয়েট তুমি আজ কেমন ছিলে?"


(২)


জুলিয়েট তোমার কন্ঠস্বরে আজ কি ছিল?
কেমন যেন খুব সুপ্ত বেদনার ছায়া? অন্তর্গত কান্নার মতো;
সে ভেজা কন্ঠে তুমি বললে, "আসুন কিছুক্ষণ গল্প করি";
জুলিয়েট, এমন বেদনার্ত স্বর তো শুনিনি কখনো তোমার?
আজ যেন ভাবতে পারছি না "ছলনা, অথবা নিষ্ঠুরতা";
হয়তো আজ তুমি সত্যিই ছিলে আহত, ছিলে রিক্ত;
আগামীকাল আবার সব ঠিক হবে,
আর আমি তেমনই,_ চিরদিন থাকবো তৃষ্ণার্ত।


(০৯.০৯.১৯৯৮)


----------------------------------------------------------------


"জুলিয়েটনামা ৩৩"


শুভ জন্মদিন, জুলিয়েট!
ভেবেছিলাম তোমার জন্মদিনে বদলে যাবে অনেক কিছু!
কিছুই বদলে গেলো না,
শুধু হৃদয় মাঝে, অনুভবে এলো একটু বিষণ্ন মধুরতা;
বদলে যায় না বাসের জন্য দীর্ঘ সারিতে ঘর্মাক্ত একটি ঘন্টা;
বদলায় না রাস্তায়, ট্যাক্সি, বাস, গাড়ির বিষাক্ত ধোঁয়ার উদগীরণ,
শব্দদূষণে কান চাপা কষ্টে নুয়ে পড়ে আমাদের শহর,
এবং পরিশোধিত হয় না কখনোই আমাদের দূষিত আত্মা!;


হায় জুলিয়েট, কোনো কিছুতেই এই পৃথিবী বদলায় না,
কিছুতেই কাটে না তার রূঢ়তা;
জন্মদিনের উপহার পাঠালাম তোমাকে, নিয়ে গেলাে উপহারটি সিদ্ধার্থ;
আমাদের দু'জনের একাকী, দূষিত, ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু জীবনে
এতটুকুই রোমান্টিকতা, বেঁচে থাকার ক্ষণিক প্রেরণা;
জুলিয়েট, তুমি তা করো না আজ অবহেলা।


(২০.০৯.১৯৯৮)