"জুলিয়েটনামা ৩৪"


এত দুঃখ দাও তুমি, করে দাও অসহায়;
তোমার মাঝে কি নেই কোনো দুঃখবোধ, অসহায়ত্ব?
এত দুঃখ, ক্ষোভ, অসহায়ত্ব আর রাগ,_ তুমি অর্পণ করো আমাকে!
ইচ্ছে করে, ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেই শহরের সমস্ত
প্রেমিকাদের অভিসারের জানালা; মাঝ রাস্তায়
তৈরী করি প্রেমের গ্রন্থ দিয়ে বহ্নি উৎসব;
পৌরাণিক প্রেম কাহিনির মতো
বিষাদে উপড়ে ফেলি নির্বিকার কোটর থেকে চোখ,
যেন দেখতে না হয় আর কোনো কপোত কপোতিদের উচ্ছল অবয়ব;
পাঁজরের প্রতিটি হাড় ভেঙ্গে ভেঙ্গে বের করে আনি
স্পন্দনরত হৃদপিন্ড; স্তব্ধ করে দেই সুরলোক নন্দিত স্পন্দন,
যেন নেই আর প্রয়ােজন তার অহেতুক এই ধুকপুক করে যাবার;
জুলিয়েট, আর ভালো লাগে না!,_  প্রার্থনা শুরু করো,
যেনো আমি সব তুচ্ছ করে ফিরে যেতে পারি,_
একদা আমার হৃদয়বিহীন প্রান্তরে আবারো।


(২৩.০৯.১৯৯৮)


----------------------------------------------------------------


"জুলিয়েটনামা ৩৫"


জুলিয়েট, আবার যদি প্রশ্ন করো,
"আপনি কেনো আমার সাথে আর কথা বলেন না?"
তাহলে বলতে হবে, "তোমার সাথে কথা বলতে গেলেই,
নীল সাগরের উন্মত্ত ঢেউয়ের মতো প্রচন্ড আবেগ
আমার কন্ঠমুখ অসহায় নিমজ্জনে রূদ্ধ করে দেয়;
অতি মাত্রায় পূর্ন রাজকোষের মতো
হৃদয় মাঝে আছে বন্দী যত,_ কথামালা, ক্ষোভ, প্রার্থনা;
ইচ্ছে করে চিৎকারে উন্মুক্ত করি আবেগের দরজা,
কিন্তু পারি না জুলিয়েট, তোমার নির্মম নিস্পৃহতা,
শায়ক বেঁধা পাখির মতাে নিথর করে দিয়েছে
আমার সমস্ত অনুরাগ, মরণোন্মুখ নদীর স্রোতের মতো
অন্যমনষ্ক, বেদনার্ত এখন আমার সকল ভাবনা,
তাই আজকাল আর তোমার সাথে কথা বলতে পারি না।"


(১৮.১০.১৯৯৮)


---------------------------------------------------------------


"জুলিয়েটনামা ৩৬"


আমার সবকিছু বেদনার্ত হয়ে পড়ে,_ এইসব দিনরাত্রি;
এই বেঁচে থাকা যেন,_ ঘুণপোকাদের মতো;
যখনই মনে পড়ে তোমার কথা অথবা
যখনই তুমি থাকো সম্মুখে,_ উপেক্ষায়!
সবকিছু বেদনার্ত হয়ে যায়;
লোডশেডিং এ মোমবাতি,
সে আলোর চারিদিকে আমার ভাবনাগুলো,
বৃষ্টিস্নাত চাঁদের আলো,_ সবকিছু যেনো নীলের মাঝে ডুব দিলো;
যখনই তুমি সম্মুখে, অথচ ঘৃণা নিয়ে বহুদূরে!
তখনই হে কৃষ্ণগোলাপ, আমার সবকিছু বেদনার্ত হয়ে পড়ে।


(২১.১০.১৯৯৮)