"পাপ"


আদিমাতার একটি পাপের ফলে,
শুরু হলো বসবাস মানবের এই পৃথিবীতে;
এবং সেই শুরু থেকে মানুষের গভীরে প্রোথিত হলো পাপ;
আমাদের মুখে চোখে জিহ্বায় পাপ,
হাত পা উরুতে গোপন অঙ্গসমুহে পাপের মালিন্য;
পাপের শেকড় এত গভীরে ছড়িয়ে আছে আমাদের
আত্মায়, মানুষের সাধ্য নেই সে শেকড় সন্ধানের বা
উপড়ে ফেলার; নারী পুরুষের দৈহিক মিলন বিধাতার
অপূর্ব দান, যা প্রেমের পূর্ণতার অন্তিম শিখর;
সে সহবাস ব্যবহৃত আজ তুচ্ছ সব স্বার্থ উদ্ধারে,
যেন ব্যবসার এক প্রকার পুঁজি, জীবন ধারণের
একটি ধূর্ত অবলম্বন; যে মিলনে ফোটে ফুটফুটে
পুষ্পের মতো শিশু, তার পবিত্রতা নামিয়ে এনেছে
অনেক নীচে, পৃথিবীর প্রচুর পাপগ্রস্থ মানুষ;
পাপ যেন স্থির নীল আকাশ, পুণ্য তাতে ভেসে
বেড়ানো মেঘ, একটু বাতাসের ফুৎকারে পুণ্যের
পলায়ন; আর পাপ!_ অনমনীয় অবিচল অমৃত বৃক্ষ।


(২৫.০৩.১৯৯১)


"লা-ইল"


বিদেশী বাঁশির সুরের প্রতিটি ভাঁজে, আমি দেখতে পাই
তোমার অপূর্ব মুখশ্রী, হাস্যরত, যা তুমি ছিলে না, হয়েছো এখন;
এই করুণ সুরটি আমাকে বাধ্য করে বহুদিন পর তোমাকে লিখতে
একটি আবেগের চিঠি; যাতে বেদনাই মুর্ত মূলত;
বাঁশিটির সুরের ভাঁজে ভাঁজে অনুভব করি বেদনার নীল রঙ,
যে নীলের মাঝে তুমিও প্রস্ফুটিত; তুমি কেনাে এমন হলে?
মানুষের বেদনা কত প্রগাঢ় হয়, তাই যেন তুমি দেখালে;
বাঁশির সুর মনে করিয়ে দেয়, তোমার আশ্চর্য সব মধুর স্মৃতিগুলো;
তোমার চোখের অপার্থিব নিষ্পাপতা, আমাকে করে তুলতো
পৃথিবীতে বেঁচে থাকবার জন্য তৃপ্ত এক মানুষ;
তুমি যদি আবার ফিরে আসো ভালোবাসায়, তাহলে নিঃসঙ্গতাকে
আমি ফেলে দিয়ে আসবো দূর কোনো পাহাড় চূড়ায়।


(০৭.০৪.১৯৯১)


"প্রিয় শিল্পী, ঈর্ষা, অভিমান"


প্রিয় শিল্পীর বেদনার্ত কন্ঠ যখন আমাকে বিদীর্ণ করে,
চাঁদের আলোয় তুমি তখন বাগানে হাঁটাহাঁটি করো;
সন্তান হারানো শোক যখন শিল্পীর কন্ঠে নিঃসৃত হয়,
তখন জাগে আরেকটি শোক, যার জন্ম তোমাকে ঘিরে;


প্রিয় শিল্পীর অপূর্ব কন্ঠে আমার মাঝে জাগে ঈর্ষা ও অভিমান,
কার ওপর? হয়তো তুমি অথবা অন্য কেউ;
প্রেমিকের সাথে একান্তে বসে গোপন কথা বলবে বলে,
খালাতো বোনটি নির্বাসন দেয় আমাকে, আমারই নিজ কক্ষ হতে;
ইচ্ছে জাগে চিৎকার করে উঠি ঈর্ষায়,
"এ প্রেম তুমি করতে পারবে না, যে প্রেম অবর্তমান আমার জীবনে"।


(০৯.০৫.১৯৯১)