করুণ কেরাণী
কম্পিউটারে দিনের শেষ ঠোকা দিতেই,
ফিরে পেলো সম্বিত; ‘ওহ! ন’টার ওপরে বাজে!
কে যেন বলছিলো, বাইরে খুব বৃষ্টি হচ্ছে, হোক বৃষ্টি হোক,
প্রচন্ড খরদাহে এবার কষ্ট পেলো, এই শহর ও তার সারথীরা,
মানুষের ঔদ্ধত্যে বন্ধু জলবায়ু, এখন শত্রু সবার এই পৃথিবীজুড়ে;
বৃষ্টির আগমনের অপেক্ষায় অপেক্ষায়, ছাতাটাও আনতে শুরু করিনি’


অফিস করিডোরের এমাথা থেকে ওমাথা শুনশান,
সহকর্মীরা সব উধাও বহু আগেই, বড় স্যারেরা তারো আগে,
নি:সঙ্গ গার্ড ঠায় দাড়িয়ে। ‘কি কাজ এত কেরাণী স্যারের,
চইলা গেলে, এই ঠান্ডায় দিতাম ঘুম সুখের তলে’


করুণ কেরাণী রূপবতী বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে ভাবে,
‘যা থাকে কপালে, নেমে পড়ি বিসমি­ল্লাহ্, বাসবন্ধুদের খোঁজে,
ধারে কাছে তো আর না, বহুদূরে পাক্কা দুই ঘন্টা
ফিরতে তো হবে বাড়ী, বাজবেই বারোটা, ও এখনও জেগে আছে,
কত বলি তাও শোনে না, ওরে বাপরে কি ঝুম বৃষ্টি!
না বাঁধালেই হয় জ্বর-সর্দি,
আমাকে ছাড়া আহা! স্যারদের এক মুহূর্ত চলে না,
বড় ভালোবাসেন তারা!’


(২৭.০৪.২০১০)


(হে করুণ কেরাণী! সকাল ৮টা থেকে রাত ১২টা, তোমার জীবনহীনতা! কেউ কি কিছু বুঝলো ওরা! - “১৩ই বৈশাখ, ১৪১৭ রাত ন’টার পরে” একটি সত্যিকারের কর্মদিবসের কথা, অফিসার ছিলাম, ছিল নিজস্ব কক্ষ, আর ছিল ঐ দুয়ার, যেখানে দাড়িয়েছিল, রাবীন্দ্রিক সাজবতী! তাহলে বুঝুন, এবার আসল করণিকদের জীবনহীনতার জ্বালা, আমি এই দিনটিতে নিজে বুঝলাম এবং রাতেই কবিতাটি লেখা; ছুটির দিনেও তাদের টেনে আনা হতো অফিসে! সামান্য বেতনে কি খাটানো হয় তাদের!)