“জেরিনপাঠ ২৩”


যখন নিঃসাড় নিস্তব্ধ থাকে মুঠোফোন,
শঙ্কায় শঙ্খচিলের মতন ওড়ে নীলিমায় অস্থির মন;
ঘটে যায় কি কোনো বিবর্তন - তোমার জীবনে?
পাষাণ, কোন কামনার আগুনে, ঢালে বিষ তোমার কানে;
পাষাণী, কোন ছিটগ্রস্থ প্রলাপে, চোখে তোমার কষ্টের জল আনে;


আর কত কষ্ট পাবে? বুক ভার আধেক নিশ্বাসে;


জীবনের অন্যদিকগুলো যদি অষ্টপ্রহর না জ্বালাতো আর,
তোমায় ঘিরে থাকতাম অনুক্ষণ;
দিগন্ত জুড়ে স্বচ্ছ নীল জলরাশির মাঝে,
মানচিত্রে ঠিকানাবিহীন,_ নিঝুম দ্বীপের মতন।


(অক্টোবর ১৩, ২০১৬)


---------------------------------------------------------------


“জেরিনপাঠ ২৪”


প্রতিবেশী ধনী বন্ধুটি আজ সকালে ফেসবুকে দেখায় তার স্মৃতি,
১৩ ভাইবোনের ঝলমলে সংসার কত যে মিষ্টি মুখ,
নারীর মুখ সাদাকালো নস্টালজিক ছবি,
ভারী হয় বুক অভিমানে নিজের নিঃসঙ্গতায়;
ফেসবুক থেকে যদি সেই ফিতে খুলে আনা যেতো,
বিছিয়ে দিতে পারতাম ঢাকা হতে দিনাজপুর;
মন উচাটন সেই স্মৃতির মালা তারা গেঁথেছে অবিনশ্বর;


তেমনি ঠিক তোমার গল্প জেরিন, গল্পের পর গল্প;
কচি ধানের মতো শিশিরমাখা স্নিগ্ধ, নীল অপরাজিতার নীল;
নিকষ কালো রাত্রির কোটি নক্ষত্র ঝিকিমিকি ছটার মতো গল্প;
সেই গল্প জুড়ে আছে ভাইবোনদের বেড়ে ওঠার ঝলমলে স্মৃতি;
কত বিচিত্র সুন্দর নারী,_শাওন, রেশমী, রীমা, মৌটুসী, রূপা, শ্রাবণী;
হৃদয় খুঁড়ে সুখ আর যন্ত্রনার
সেই অলীক সুতোয় বোনা অনন্ত গল্পের চাদরে,
যেনো ঢেকে দেয়া যায় বাংলার নদী বন আদিগন্ত চরাচর পরম স্নেহে;


আর আমার জীবন,_ একশ বছরের নিস্তব্ধতার নিচে চেপে পড়ে থাকা
বিচ্ছিন্ন দ্বীপের ওপর নিঃসঙ্গ গাঙচিলের আর্তনাদ;
আধো অন্ধকার ঘরে একা বেড়ে ওঠা কৈশোর থেকে যৌবন;
ছিলো না মিষ্টি কোনো বোন, তার আদর আশকারা স্নেহ প্রশ্রয়;
একপেশে রোমান্সে, ভালোলাগা নারীর সাথে কল্পিত কথোপকথনে,
আর নানা ভাবনার কল্পনার গাঁথুনিতে মাথা ঠুকে গেছি বারেবার;


জেরিন, তুমি কক্ষোনো বলবে না, একাকিত্ব নিয়ে আমার রাগ, ঈর্ষা,
এই প্রথম! প্রথম! বলে চিৎকার! সব ভ্রান্ত বানোয়াট;
তোমাদের মতো আমার জীবনে স্মৃতিরা হেসে ওঠে না যখন তখন;
ভরিয়ে রাখে না জীবন শতগল্পে,
            রাঙায় না কোনো মুহূর্ত,_ বেঁচে থাকার সামান্য দুটি ক্ষণ।


(অক্টোবর ১৪, ২০১৬)