মঞ্চ তৈরী হতে হবে!
এই আপাত গণতান্ত্রিক মুক্ত নীলিমার নীচে,
পড়ে আছে যে দুর্বিসহ মায়াজাল পাতা শাসনের জমিন,
তার অনিরুদ্ধ দুরাচারী বুকে, মঞ্চ তৈরী হতে হবে! আরো একবার;
আরো একবার সেদিনের সে দৈব দিবসের মতো,
কবি আর বিদ্রোহীগণ টানবেন জনসমুদ্র মাঝে
সুসময় ফেরাবার শব্দাঘাতি দাঁড়;


সেই মঞ্চের কাঠামোতে থাকবে,
গ্রামীণ সবুজ বাঁশ আর পাটের দড়ির বাঁধন;
শোভিত হবে শুধুমাত্র সাদা তাঁতের কাপড়ে,
হয়তো আর থাকতে পারে শোকার্ত কালো,
তবে এর বেশী নয়, কেননা এ দিনগুলো আজ,
আনন্দ রঙ বর্জিত - স্বদেশভূমির ধূসর সময়;
  
সেই মঞ্চ হবে,
সাদা কালোয় ওড়া পায়রার মতো - মুক্তির জন্য
স্বৈরক বিতাড়নের জন্য শুদ্ধ তন্ত্র - উচ্চারণের জন্য
প্রকৃত কবিতা পাঠ - বাঙালির প্রকৃত জীবনের জন্য
মঞ্চ জুড়ে থাকবে গ্রাম বাংলার সুদূর বিস্তারী গন্ধ;


কেরোসিন কাঠে নির্মিত অ-আরামপ্রদ চেয়ারে,
বসবেন কবি এবং বিদ্রোহীগণ;
পটুয়ার বেহায়া, অথবা পাকি দানবটিকে আবার,
সেঁটে দেয়া হবে কবিদের পেছনের কাপড় দেয়ালে;
ঐ মহৎ অঙ্গন মুখরিত হবে কবিগণের অমিয় কন্ঠস্বরে,
ভোর থেকে সন্ধ্যা, এতটুকু থামবেন না কবিরা,
ছড়াতে থাকবেন বিদ্রোহী বাতাসে,
সুধাময় কন্ঠস্বরে, তাদের অনবদ্য দ্রোহ পঙক্তিমালা;
স্মরণে আসবে সবার,
এমনি করে একদা, তাড়িয়েছিলেন কবিগণ - এক বিশ্ব বেহায়া;


মঞ্চ ভেঙ্গে ফেলা হলে মধ্যরাতে,
কবিগণ বিশ্রামে যাবেন আপন আলয়ে;
আর বিদ্রোহীগণ, কবিদের সুধাময় শক্তি নিয়ে,
পরদিন প্রাত হতে দৃপ্ত শপথে,
চির ধরাবেন আধিপত্যবাদের ঐ অশ্লীল দেয়ালে;
যতদিন না ধ্বসে পড়বে দেয়াল, বিদ্রোহী ও কবিগণ,
রক্ত দিয়ে লিখে যেতে থাকবেন শব্দ, "গণতন্ত্র" "গণতন্ত্র";
শব্দটি পরিণত হবে শক্তিশেলে, গতি দেবে বীর জনতার দ্রোহ-রথে,
যা আনবে সু-সম সুদিন - অগণতান্ত্রিকতার এই দুঃসহ রাজপথে।


(২১.১০.২০২০)