আমি আকাশের নিরাকারের দিকে তাকিয়ে,
ভাবলাম কোনো একদিন; হয়তোবা বললামই;
একটি দুঃখের চরাচর ভেঙ্গে পড়ে, জেগে ওঠে অবোধ্য এক প্রশ্ন,
জেঁকে বসে আমার অস্তিত্বে, হয় অলৌকিক আকাঙ্খার স্বপ্ন;


পৃথিবীটা যদি মা'য়েদের হতো!


পৃথিবীটা যদি মা'য়েদের হতো, সেদিনই যেনো একটি স্নেহের ঝর্ণা,
পৃথিবীটার বুক ফুঁড়ে জাগতো নিরপেক্ষ; হোক না যে কোনো ধারার জন্ম,
চন্দ্রিমার মতো নরম আলোর স্নেহে, তাকে যে স্বাগত করা হতো;


মা’য়েদের স্বর্গ বাগানে, যদি একে একে কন্যাফুল ফোটে,
কেউ ছড়াতো না শ্লেষের অন্ধকার, অগৃহীত আর অবিরত পুত্রদাবীর শোকে;
কেউ দেখাতো না আঙ্গুল, দোষী এই নারী! তার জন্মদানে, কোনো সূর্য কেড়ে নিতো না গ্রহনে,
মায়ের মুখের তৃপ্ত চাঁদমাখা হাসি - তাঁর স্বর্গীয় অবদানে;


আমি দেখেছি স্বচক্ষে মুহ্যমান, জনকের চোখ হঠাৎ পাথর, কন্যার আগমনী সংবাদে,
শরীর স্তব্ধ নিথর, হাত হতে খসে পড়া, মিষ্টির ব্যাগের ভিতর, জাগে যেনো বিবর বিরাগ;
তার কাঁধ থেকে সরে যায় একে একে, বোঝাবার যত ক্লান্ত আঙ্গুল, চেয়ারে বসা অনড়,
তবু তার বিষাদী ওঙ্কারী শ্লেষ, ছড় ছড় করে ছড়ায় কালিমা, সদ্যপ্রসবা মায়ের মুখের ওপর;
ফ্যাকাসে সে মায়ের মুখ, সংসারের কারো প্রাণে, কাটে না কোনো দুঃখের আঁচড়; বরং যেনো শুনি,
স্বৈরিণী বিষকন্ঠী ফুসে ওঠে, "অলক্ষী অলক্ষী তোর, শুরু কর হতভাগা নতুন তোড়জোড়।"


হায়! দুঃখ আমার বুকে, পৃথিবীর সব পাহাড়ের মতো একসাথে ভেঙ্গে পড়ে,
যখন দেখি মা’য়েরা আমার, কন্যা প্রসবে সংসারে যত কালিমার, ঝড়ে অস্পৃশ্যা হয়ে ওঠে;
গ্লানিমাখা অপরাধী ভীত থরথর বুকে, ধরে রাখা ঐ কন্যার কপালে,
চুপিসারে আহা! লুকিয়ে যেন, মমতা আর সান্তনার,
বাঞ্ছিত তুই সোনারে আমার, এই সুরে আহা! মন ভুলানো সুরে, এক প্রগাঢ় স্নেহের চুম্বন আঁকে।


কন্যার ফুল এই পৃথিবী রাঙায়, আজ আরো বেশী পুত্রশস্য থেকে,
তাই তো তাকালাম নিরাকারে সেদিন, বললাম এ দোষাচার দেখে,
দিয়ে দাও তুমি দিয়ে দাও, শুধু মা’য়েদের করে দাও এই পৃথিবীটাকে।


(২৪.০৬.২০২০)