(মূল রচনাঃ When My Sorrow was Born
                              by Kahlil Gibran)


যখন আমার দুঃখটির জন্ম হলো, তাকে লালন করলাম সযতনে,
জড়িয়ে রাখলাম সারাক্ষণ পরম মমতায়;


তারপর পৃথিবীর আর সব প্রাণের মতোই বেড়ে উঠলাে সে,
সৌন্দর্য্যে, শক্তিতে আর অপার বিস্ময়ে;


আমি এবং আমার দুঃখ, একে অপরকে ভালোবাসলাম,
ভালোবাসলাম আমাদের একান্ত পৃথিবীটাকে,
কারণ দুঃখটির ছিলো একটি স্নিগ্ধ হৃদয়,
আর আমার হৃদয়টি ছিলো সে দুঃখটিতেই স্নিগ্ধ;


যখন আমরা কথা বলতাম, আমি এবং আমার দুঃখ,
দিনগুলাে মেলে দিতো ডানা আর রাতগুলো হয়ে যেতাে স্বপ্নময়,
কারণ দুঃখটি ছিলো মুখর আর আমার মুখরতা ছিলো দুঃখটিকে নিয়েই;


যখন আমরা একসাথে গান করতাম, আমি এবং আমার দুঃখ,
প্রতিবেশীরা জানালার পাশে বসে শুনতো,
কারণ আমাদের গানের কলিরা ছিলো সমুদ্রের মতো গভীর
আর তার সুরগুলো জাগাতো অসাধারণ সব স্মৃতি;


যখন আমরা একসাথে হাঁটতাম, আমি এবং আমার দুঃখ,
কিছু মানুষ তাকাতো আমাদের দিকে কোমল চোখে আর
মৃদু আলাপন করতো সুশোভন সব শব্দে,


আর কিছু মানুষ! তাকাতো আমাদের দিকে ঈর্ষায়,
কারণ আমার দুঃখটি ছিলো নিঁখুত আর আমি ছিলাম অহংকারী আমার দুঃখটিকে নিয়ে;


কিন্তু একদিন! আমার দুঃখটি মরে গেলো, পৃথিবীর আর সব প্রাণের মতোই,
এরপর আমি হয়ে পড়লাম শোকার্ত  আর খুব একা;


এখন আমি যখন কথা বলি, শব্দগুলোকে মনে হয় ভারী, মাধুর্য্যবর্জিত
এখন আমি যখন গান করি, প্রতিবেশীরা আর তা শুনতে আসে না
এখন আমি যখন হাঁটি একা, কেউ আমার দিকে আর তাকায় না


শুধু ঘুমের মাঝে আমি এখন শুনতে পাই কন্ঠস্বর, করুণায় যারা বলে,


"দেখাে, ঐ যে মানুষটি শুয়ে আছে, ওর দুঃখটি মরে গেছে"।


(১৩ই এপ্রিল, ২০১০)