কুড়ি বছর পর দেখা হলো আবার তোমার সাথে সেই বটতলাতেই,  
আমি ঠিক প্রথম দিনের মতই চমকে উঠলাম ।
তোমার চুলে পাক ধরেছে, চোখে মোটা কাঁচের চশমা, গাল দুটো যেন একটু ঝুলে পরেছে ।
তবুও রূপের ঝাঁজ যেন একটুও কমেনি তোমার ।
আগের মতই রূপবতী আছো আমার চোখে এখনো তুমি ।
কুড়ি বছর অনেক সময় তাইনা চন্দ্রমল্লিকা?
দেখেছো এখনও তোমায় দেয়া নামটা আমি ভুলে যাইনি
স্মৃতির অকপটে রেখেছি বড় যত্ন করে ।
চন্দ্রমল্লিকা তোমার চপলের কাল তিলটার দিকে আজকেও  আমার চোখ আটকে গেল,
অবাক চোখে অপলক দৃষ্টি তে তাকিয়ে আছি ঠিক সেই প্রথম দিনের মত ।
কুড়িটি বছর আমি দেখি না এই রূপ, কুড়িটি বছর আমি ধরিনা তোমার হাত ,
কুড়িটি বছর আমার নেওয়া হয়নি তোমার মেঘ কাল চুলের ঘ্রাণ ।  
আজ সেই ঘন মেঘ কাল চুলে তুষারের মত শুভ্রতা হানা দিয়েছে
তবুও যেন তুমি অনন্যা , অপ্সরা, সেই আমার চন্দ্রমল্লিকা ।
ছি ছি ছি কি বলছি আমি তোমায় এই সব , ভুল হয়ে গেছে ক্ষমা করে দিও আমায় ।  
আজ তো তুমি কাছে দাঁড়িয়েও বহু দূরের একজন ,
তোমার কাছে আসতে হলেতো আমাকে পাড়ি দিতে হবে কুড়ি বছরের পেছনের পথ ।
কোন অভিযোগ নেই আমার তোমার প্রতি নেই কোন অভিমান নেই কোন রাগ ও ঘৃণা।
আছে শুধু একটাই প্রশ্ন, যে প্রশ্নের জবাব আমি খুঁজে বেড়াচ্ছি কুড়ি বছর ধরে ।  
কেন চলে গিয়েছিলে আমায় একা ফেলে চন্দ্রমল্লিকা?
চন্দ্রমল্লিকা এদিক সেদিক চেয়ে আমায় নিচু স্বরে অস্পষ্ট কন্ঠে বলল
‘কে আপনি আমি ত আপনাকে চিনতে পারলাম না ।’  
আঁচল দিয়ে মুখ চেপে ঘুরে চলে গেলে আমার পাশ কাটিয়ে
আকাশের মেঘগুলো মনে হয় আমার মনের ব্যথা টের পেয়ে গেছে,  
তাই আমার চোখের পানি লুকানোর জন্য বৃষ্টি হয়ে ঝরে পরলো উত্তপ্ত এই ধরার বুকে।
বুঝলাম না বৃষ্টির পানির স্বাদ কি লোনা হয়ে গেছে ?
তুমি যাওয়ার আগে একবার ফিরে তাকালে আমার দিকে ,
তোমার চোখে জল ছিল কিনা বুঝলাম না
কারণ আমার চোখে যে অনেক জল জমা হয়ে আছে ।
চন্দ্রমল্লিকা আর কি দেখা হবে কোন দিন এই চলতি পথের মাঝে
ঠিক এমনি কোন বৃষ্টি ভেজা দুপুর বেলাতে??