বাংলা আমদের মাতৃ ভাষা । পৃথিবীর অন্যতম বহুল প্রচলিত ভাষাগুলোর মধ্যে একটি আমদের বাংলা ভাষা । ভাষাভাষীর সংখ্যানুসারে এর অবস্থান চতুর্থ থেকে সপ্তম । প্রায় ২৮ থেকে ৩০ কোটি লোকের মাতৃ ভাষা বাংলা । বাংল ভাষা বাংলাদেশের প্রধান ভাষা এবং ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কথিত ভাষা। বাংলাদেশ সহ , ভারতের পশ্চিম বঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা, মিয়ানমারের রোহঙ্গা জনগোষ্ঠী সহ আন্দামান ও নিকোবার দ্বীপ পুঞ্জের জনগোষ্ঠীর ভাষা ও বাংলা ।  
বাংলা ভাষার রয়েছে সুপ্রাচীন ইতিহাস। ভাষা ও জাতি কিন্তু এক নয় । আমরা যখন বাংলা ভাষার ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করবো তখন আমদের একটি কথা মনে রাখতে হবে যে, আদিম ভাষা হতে ক্রমশঃ পরিবর্তনের ভিতর দিয়ে আমদের আধুনিক বাংলাভাষা এসেছে। সেই আদিম ভাষাভাষী জাতি আর আধুনিক বর্তমান বাঙ্গালী জাতি যে এক হবে তার কোন সবতঃসিদ্ধ প্রমাণ নাই । আজ হতে ন্যূনাধিক ৫০০০ হাজার বছর পূর্বে এক জাতি ইউরোপের মধ্যভাগ থেকে দক্ষিণ পূর্বাংশে বাস করতো  এবং তারা মোটা মোটি একই ভাষায় কথা বলতো । এই ভাষাকে হিন্দু- ইউরোপায়ণ ( Indo- European Parent Speech) ভাষা বলা হয়ে থাকে । এই ভাষাগোষ্টির দুটি বিভাগ ছিল ।  একটি কেন্তুম (Cenum )এবং অপরটি শতম ( Satam )। কেন্তুম বিভাগের সাথে আমদের বাংলার কোন সাক্ষাৎ সম্বন্ধ নেই কিন্তু শতম বিভাগ হইতে যে আর্য শাখা উদ্ভূত হয় তার সাথে বাংলার সাক্ষাৎ সম্পর্ক রয়েছে। আর্য শাখার স্ববিভাগীয় শাখাগুলি এই যথা : আলবানী, বাল্টোস্লাভোনিক, আর্মানী। আর্য শাখার দুটি প্রধান প্রশাখা স্বীকার করা হয়েছে : একটি ঈরানী এবং অপরটি ভারতী । ঈরানী প্রশাখা হতে আবেস্তার ভাষা, প্রচীন পারসী ভাষা, পহলবী বা মধ্য পারসী ভাষা , আধুনিক পারসী ভাষা , কুর্দ্দিস্থানী, বলচী, আফগান সহ প্রভৃতি ভাষা উৎপন্ন হয়েছে । অপর দিকে ভারতীয় আর্য প্রশাখা হইতে ক্রমশ বিবর্তন ও পরিবর্তনের ভিতর দিয়ে বাংলা ভাষার বর্তমান রূপ আমরা পেয়েছি।
চলবে......।
তথ্যসূত্রঃ বাঙলা ভাষার ইতিবৃত্ত,  ডঃ মুহাম্মাদ শহীদুল্লা  বাংলাপিডিয়া, উইকিপিডিয়া,
বাঙলা সাহিত্যের ইতিহাস,  ডঃ সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়