আজ হতে কয়েক হাজার বছর পূর্বে  
জেগে উঠেছি আমি সহস্র হাজার প্রাণ নিয়ে
ধনধান্যে ভরা সবুজের প্রাচুর্যতায় স্বর্গের টুকরোর রূপে
এই ধরনীর বুকে।
যুগে যুগে কত হাজার বছর ধরে এই স্বর্গপুরীর লোভে    
মরুভূমির মরু প্রান্তর পেড়িয়ে, সমুদ্রের উত্তাল ঢেঁউ ডিঙ্গিয়ে,
নদ,নদী,পাহাড়,ঘন জঙ্গল পেড়িয়ে
কত জাতির কত রাজা এসেছিল আমার প্রাচুর্যতার পদতলে ।  
কত জাতি, কত রাজা, কত প্রজার ছিল বাস  
আমার প্রাচুর্যর ছায়ায় শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে
আমারই আদি সন্তানদের সাথে।  
আমার বক্ষ ক্ষত বিক্ষত করে বনিকের বেশে
শত বর্ষ ধরে সবুজের বুকে রক্তের লাল রং কে নীল করে দিয়ে
চষে বেড়াল কিছু শ্বেত ভীন দেশী এসে ।    
যুগের পর যুগ আসে হয়না শেষ এখানে মৎস্যন্যায়ের,
শাসন আর শোষণের রোষাণলে পৃষ্ট করে,
ছেড়ে দিয়ে গেল অবশেষে কিছু পহলবি হায়নার হাতে  
ধর্মের দোহাই দিয়ে ।  
সিকি বছর ধরে সর্বস্ব নিংড়িয়ে
আমার দেহের এপাশ ওপাশ ছিড়ে,
পালিয়ে গেল সিন্ধু নদের তীরে কুকুরের মত লেজ গুটিয়ে  
বজ্র কণ্ঠের হুঙ্কারে আমার সন্তানদের তাড়া খেয়ে
এক সাগর রক্তের স্রতে ভেসে।
অমাবস্যার ঘন আঁধার কেটে এক ফালি চাঁদ উঁকি দিয়ে
আবার ঢেকে গেল নিকশ কাল অজানা আঁধারে।
থেমে গেল বজ্র কন্ঠ নিভে গেল সূর্যের আলো,
কেটে গেল অন্ধকারে কয়েক যুগ ।
যুগের পর যুগ পেড়িয়ে রাতের কাল আঁধার ছাপিয়ে
জ্বলে উঠলো আলো;
এ আলো নয় দিবাকরের আলো ,
এ আলো যে জ্বলন্ত অঙ্গারের ।
দিবাকরের আলোকে অবাঞ্ছিত করে
অঙ্গারের স্ফুলিঙ্গ থেকে জ্বলে উঠলো আগুন আমার সাড়া দেহে।
আজ সেই আগুনেই পুড়ছি আমি বছরের পর বছর ধরে লাশের বোঝা বয়ে ।