‘এই তোর নাম কিরে?’  
‘এক এক সময় এক এক নাম কোনটা শুনবেন?’
‘আসল নামটা জানতে চাই?’
‘এত নকল নামের ভিড়ে আসল নামটা যে গেছি ভুলে।‘
‘বাড়ি কোথায়? কবে এসেছিস এই খানে?’
‘সেই যে কবে কোন ভাদ্র কালে কাক ডাকা ভোরে
ছেড়েছিলাম বাড়ি আমি ক্ষুধার তাড়নাতে,
‘বেশ্যা হয়েছিস কেন?’  
‘বেশ্যাতো হয়েছি স্যার আপনাদেরই জন্য, আমরা বেশ্যা না হলে  
আপনারা কোই যাইবেন?’  
‘অসভ্যের মত কথা বলবি না।‘
‘সভ্য অসভ্য বুঝিনা স্যার, বুঝি শুধু টাকা, টাকা না হলে  
ভাত নাই, স্বামী নাই, ঘর নাই, পিন্দনের কাপড় নাই।‘
‘কোন ভাল কাজ করিস না কেন?’
‘গেছিলাম বাসা বাড়িতে কাজ করতে সেই বছর খানেক আগে,
ভরা যৌবন আমার হল কাল সাহেবের কু নজরেতে,
ছলে বলে কৌশলে, কখনো বুকে কখনো পাছায় দিত হাত
সবার আড়ালে। এক দিন এক কাল রাতে হঠাৎ ঘুমের মাঝে বুঝি
কে যেন আমায় নষ্ট করছে, ভারী একটা শরীর আর গরম নিঃশ্বাস,
আমি চিৎকার করতে গিয়েও পানি না, একটা শক্ত ধাতব হাত আমার মুখে।‘
‘ তুমি কাউ কে বলনি?’
‘ মেম সাহেবরে বলেছিলাম, সে আমায় মেরে সেই রাতেই দিল তাড়িয়ে।‘
‘তুমি কোনই প্রতিবাদ করলে না? পুলিশে গেলে না?’
‘ থন ফালাইয়া স্যার, করলে করেন না করলে টাকা দিয়া বিদায় হয়,
প্যাচাল হয়ে গেছে অনেক, বেশ্যার লগে এত কথা কিসের,
বেশ্যা রা কথা কয়নের জন্য না, বেশ্যারা শুধু বিছানায় যাওয়ার জন্য,
তয় স্যার একটা কথা, এই সমাজ আমার চাইতে বড় বেশ্যা,
আমি দেহ বেচি পেটের জ্বালায়, আর এই সমাজ আমাদের বেশ্যা বানায়
নিজেদের তাড়নায়, …।
‘অনেক দিন আগের এক প্রফেসারের লেকচার মনে পড়ে গেল,
টাকার বিনিময় যারা দেহের যে কোন অংশ বেঁচে তারাই বেশ্যা,
আমরা সবাইত বেশ্যা, কেউ আমরা নিজের আত্মা বেচি,কেউ বেচি নিজের দেশ,
কেউ বেচি নিজেরমাথা, আবার কেউ কেউ নিজেকেই বেঁচে দেই
এক মুঠো ঐ রঙ্গীন কাগজের তৈরী নোটের বিনিময়ে ।


১৯/০৯/২০১৬ইং
টোলামোর,আয়ারল্যান্ড