আনন্দ-জোছনারা উড়ছে পৃথিবীর উড্ডীন বাতাসে
আর
হাজার বছর পোহালে তুমি কৃষ্ণ প্রহর,  
নীরব লক্ষী পেঁচার মতো বসে আছো
বাসনার সব কপাট রুদ্ধ করে, ভোগের সব
অভিলাষগুলি ভাসিয়ে বহতা নদীর জলে।যেন তুমি প্রাগৈতিহাসিক নির্লোভ সন্ন্যাসীনি  
সবার কল্যাণ তপস্যায় নিমগ্ন নিবেদিতা।
আমরা কেউ মননে মানিনা প্রাচীন বিধি পান্ডুলিপি,
তুমি শুধু সমর্পিতা সেই নিয়মের বিধানে।
শৃঙ্খলিত নিবাস ছেড়ে দু'পা বাড়ালেই
সহস্র বছরের ক্ষুধার্ত বর্ণচোরা হায়নারা    
বিধ্বস্ত করে তোমার সৌকর্যময় স্বপ্নগুলি,
তোমার নিথর ধর্ষিত দেহখানি নিরুত্তাপ
বরফের মতো হিম করে দেয় সভ্যতা,
চিতাগ্নির সর্পিল শিখায় দাহ করে তারা
তোমার ভেতর লুকিয়ে থাকা ত্রস্ত মানবতাকে।


আর কতকাল জ্বলবে রূপকানোয়ার হয়ে
সতিদাহের শ্মশানের মতো হিংস্র দাবানলে?
দেখ, ঐ সাত সমুদ্র তের নদীর পাড়ে
অবগুণ্ঠিতা বন্দীরা ভেঙেছিল রুদ্ধ লৌহকপাট,    
এনেছে আরাধ্য সাম্যতা, এনেছে নবীন  সূর্যোদয়।
বইছে বসন্ত বাতায়ন পৃথিবীর পূর্বে পশ্চিমে,
অবরুদ্ধ কপাট খুলে আলোর মিছিলে মিশে
হয়ে যাও দিগ্বিজয়ের অদম্য অশ্বারোহী।
জোয়ান অব আর্কের মতো উদ্যত তরবারি হাতে  
আঘাতের পর আঘাত করো শৃঙ্খলের
মর্মমূলে,
ছিন্নভিন্ন করো অসুন্দরের দাম্ভিক প্রাসাদ,
ধর্ষক, শোষকের রক্তের প্লাবনে ভাসিয়ে দাও
এই নির্লিপ্ত আত্মকেন্দ্রীক কাপুরুষের    জনারণ্য।
জাগাও নতুন যুগের সুন্দর সকালের পূর্বরাগ,
জাগাও আবার তোমার জঠর হতে নন্দিত পৃথিবী।  
                  -------------------