জীবন বহতা তটিনীর মতো দু’কুলের শৃঙ্খলে
নিভৃতে বহমান অসীমে,
নিরুদ্দেশে ছায়াপথের বিস্তারে।
অবিরত বরষায় নদীর যৌবনের মতো
ছুঁয়ে যায় তোমার মন, নিটোল তনু
আকাঙ্কারা উড্ডীন হয় বাঁধনহীন
বিহঙ্গের অভিলাষে অনন্ত ভালোবাসার উদারতায়,
প্লাবনের অদম্যতায় বিধৌত করো অনিয়ম জঞ্জাল,
ফলাও নুতন দিনের ফসল বিস্তৃত দু’পাড়ে দূরদিগন্তে,
বর্ণিল চঞ্চল প্রজাপতির মতো মাতাল সুগন্ধে
হৃদয়ের কপাট খুলে দাও,
কৃষ্ণতায় আকীর্ণ প্রাণের প্রকোষ্টে পূর্ণ করো
আলোর বর্ণিল বিচ্ছুরণ,
খুলে মনের রুদ্ধ জানালা
আরাধ্য স্বপ্নের নির্মলতা আকন্ঠ পান করো,
শৈল্পিক পটুয়া নারীর মতো সাজাতে চাও
পৃথিবীর বিস্তার হৃদয়ের আলপনায়,
ব্যকুল তোমার প্রাণ
আকাশ ছোঁয়া হিমালয়ের ওপারে
কর্মময় আলোকিত নগরীর প্রতিধ্বনি
তোমায় সঞ্চারিত করে ঘর্মাক্ত কর্মের উদ্যম
আর
পশ্চিমের দিগন্ত জুড়ে ঔদার্য আর বিচিন্তার
রঙধনুর মায়ায় স্বপ্নবিভোর তুমি
--এনে দিতে চাও আলো
হাজার বছর ধরে কৃষ্ণ মেঘমালায় আছন্ন অচলায়তে।


তোমার সমর্থ হাত, হৃদয়ের নিঃসীম উদারতা অবরুদ্ধ
সোনালী ডানার শকুনের তন্তুজালে,
পঙ্খীরাজের  দু্র্বার গতি তোমর
ম্রিয়মান হয়ে যায় মায়াবী চোরাবালিতে
-- তোমার অঙ্কুরিত সৌকর্যময় সৃষ্টি সম্ভার  
নিষ্প্রভ করে দেয় হেমিলনের বাঁশিওয়ালা।
মায়ের তপ্ত অশ্রু ঝরে,
বাবার স্বপ্নরা আলোর শুভ্রতায়
আসেনা আর কোনদিন,
বোনের বায়না মিটানোর সময় দীর্ঘ হয়
পড়ন্ত বিকালের ছায়ার মতো
--- বড়ই অবসন্ন ক্লান্ত তুমি!


স্পার্টাকাসের মতো শৃঙ্খল ছিঁড়ে
আঘাতের পর আঘাত করো
শোষণ আর দাসত্বের  মর্মমূলে,
ছিন্ন করো তোমার জন্য ছড়ানো যত মোহজাল,
বর্ণিল আলোয় আকীর্ন করো
তোমার নিবাস আবাস
--- হৃদয়-প্রাণ নিবেদিত ফসল  
অনন্ত মধ্যাহ্ন রাতের কৃষ্ণতায়
তোমার অপেক্ষায় থাকা প্রিয় জন্মভূমি।
-------------------